১৩ অক্টোবর, ২০২২ ১১:২৫
সাক্ষাৎকার : আজমেরী হক বাঁধন

এখনো নতুন কাউকে নিয়ে চিন্তার সুযোগ হয়নি


এখনো নতুন কাউকে নিয়ে চিন্তার সুযোগ হয়নি

আজমেরী হক বাঁধন

অভিনয় ও সৌন্দর্যে নিখুঁত আজমেরী হক বাঁধন। বাঁধন মানেই দুই বাংলায় চমক। রেহানা-মুসকান, জুবেরী-অক্টোপাস- এরপর তিনি সবাইকে চমকের অপেক্ষায় রেখেছেন গুটির ‘সুলতানা’ দিয়ে। গত চার বছরে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে সবার মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন এই লাক্স তারকা।  তার সঙ্গে সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

কেমন আছেন সুলতানা?

ভালোই তো আছি। হাহাহা... সুলতানা! এটা অবশ্য সম্প্রতি করা একটি ওয়েব সিরিজে আমার চরিত্র। সিরিজটির নাম ‘গুটি’। যেখানে আমাকে দেখা যাবে সুলতানা নামের একজন ড্রাগ ডিলারের চরিত্রে। কাজটা আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। কতটা চ্যালেঞ্জিং তা আসলে দর্শক দেখলেই বুঝতে পারবেন। সিরিজটির নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্ত।

কতদিন শুটিং করেছেন? সিরিজটিতে আরও কে কে আছেন?

১৪ দিন। চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন রিয়েল লোকেশনে সিরিজটির শুটিং হয়েছে। শাহরিয়ার নাজিম জয়, মৌসুমী হামিদ, আরিয়া অরিত্রাসহ বেশ কিছু দুর্দান্ত শিল্পীও আছেন।

গত ৪-৫ বছরে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে দর্শক খুঁজে পাচ্ছে। আগে আপনাকে এক্সপ্লোর করার ঘাটতি ছিল বলে মনে হয় এই ইন্ডাস্ট্রির?

এই ইন্ডাস্ট্রির একটি বিষয় আছে, একটি চরিত্র ক্লিক করলে সেটাই ফিক্সড হয়ে যায়। কোনো শিল্পী একটা চরিত্র ভালো করলে ওই রকম চরিত্র ছাড়া ভিন্ন ও চ্যালেঞ্জি কোনো চরিত্রে ডাক পায় না খুব সহজে। নির্মাতা-প্রযোজকদের মনে সর্বদাই একটি বিষয় থাকে, ‘সে কি এই চরিত্রটি ক্যারি করতে পারবে?’ যেমনটি আমার ক্ষেত্রেই অনেকেই ভেবেছিলেন ২০১৮ সালের আগে। সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন সৃজিত ও অনিন্দ্য। তারা ভাবনায় রেখেছিলেন বলেই ‘মুসকান-জুবেরী’ করেতে পেরেছিলাম। অন্যদিকে সাদও ভেবেছিল বলেই ‘রেহানা মরিয়ম নুর’-এর মতো একটি কাজ আমার দ্বারা করা সম্ভব হয়েছিল। এরপর করলাম বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’তে অক্টোপাস আর সর্বশেষ শঙ্খ দাশগুপ্তের ‘গুটি’র সুলতানা চরিত্র। এরা আমাকে নিয়ে ভেবেছেন। যদিও সোশ্যাল-ইকোনমিক্যাল চেহারার সঙ্গে সুলতানা যাবে না বলে কেউ কেউ ভেবেছিলেন। তবে ২০১৭-এর আগ পর্যন্ত আমি কাজগুলো এনজয় করতাম না। তখন অ্যাকটিংয়ের জন্য নিজেকে ফোকাস করতে পারিনি। তবে এখন যা করছি, ভালো লাগা থেকেই করছি।

রেহানা থেকে সুলতানা-জার্নিটা নিয়ে সন্তুষ্ট?

২০১৮-২০২২, মানে প্রায় চার বছর! এই সময়ে আমি মনের মতো চারটি ভিন্ন ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্র করেছি। এই কাজগুলো দিয়ে নিজেকে এক্সপ্লোর করতে পেরেছি। মুসকান-জুবেরী, রেহানা মরিয়ম নুর, অক্টোপাস ও সুলতানা- এই চারটি চরিত্রে আমি যতটা ইফোর্ট দিয়ে কাজ করেছি- সেটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। চারটি চরিত্রই একটা অন্যটা থেকে আলাদা ও ইন্টারেস্টিং। প্রতিটি চরিত্রই আমি অ্যাডপ্ট করতে পেরেছি। ধন্যবাদ সে সব ডিরেক্টরকে, যারা আমাকে নিয়ে চিন্তা করেছেন। অনেকে বলে থাকেন, কেন বাঁধনকে অনেক কাজে দেখা যায় না। এ নিয়ে আমি বিচলিত নই। আমি মনে করি, যেটা করতে চাইছি বা সুযোগ পাচ্ছি- সেটা আমার সততা ও পরিশ্রমের ফল।

অভিনেত্রী টাবু খুফিয়াতে আপনার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। তার মুখে অক্টোপাসের চরিত্রের বর্ণনা শুনে কতখানি মুগ্ধ আপনি?

টাবুর মতো একজন অভিনেত্রী আমার ক্যারেক্টারের বর্ণনা দিয়েছেন, এটা তো আমার জন্য অনেক আনন্দের বিষয়। আমি খুবই খুশি এবং ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলাম।

এখন থেকে তাহলে কি সিরিজ-সিনেমাই করবেন, নাটকে ফিরবেন না?

এখনকার সিরিজে গল্প, চরিত্র পাওয়া যায়। সঙ্গে বাজেটও। তবে নাটকের যে বাজেট তাতে যা করতে চাই বা নতুন কিছু এক্সিপেরিমেন্ট করতে চাই সেটা কি সম্ভব? ওয়েব সিরিজে নতুনত্ব, গল্প নিয়ে বিস্তর ভাবনা, চরিত্র নিয়ে এক্সিপেরিমেন্ট যেভাবে করতে পারি, নাটকের ক্ষেত্রে পারব না। অন্যদিকে আমি সিনেমা নিয়ে হোপফুল নই। যে ধরনের কাজ করতে চাই, সেটা হবে না। দেশীয় ফিল্মে নারীকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ হয়েছে কতটি? সে ক্ষেত্রে সিরিজেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তবে যখন দেখব সিরিজে আমাকে দিয়ে হচ্ছে না বা কেউ নিচ্ছে না, তখন ফের নাটকেই ফিরে যেতে পারি।

জীবন এখন কতটা সুন্দর?

খুবই সুন্দর! এখন বর্তমানকেই বেশি ফোকাস করতে চাই। জীবনকে উপভোগ করতে চাই। আগে অতীত নিয়ে বেশি ভাবতাম, পড়ে থাকতাম। সারা দিন কাঁদতাম। এখন আর ভাবী না।

এই ইন্ডাস্ট্রিতে রেভ্যুলেশন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে?

প্যান্ডামিকের পর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পুনর্জন্ম হয়েছে। এখন অনেক ইয়ং জেনারেশন ভালো কাজ করছে। আমাদের চিন্তাশক্তির অভাব, অর্থের অভাব থাকলেও ট্যালেন্টের অভাব নেই। সে জন্য ইয়ং ডিরেক্টররা এখন নতুন স্বাদের গল্প নিয়ে সিরিজ বানাচ্ছেন। সিনেমা বানানোর সাহস পাচ্ছেন। কাজটি সবার ভালো লাগতেই হবে- সেটা ভাবাটা অবান্তর। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সবার কাছেই কি মুসকা- জুবেরী, রেহানা মরিয়ম নুর পছন্দ হবে? হবে না। আসলে যেটা আমার ভালো লাগবে, আমি এনজয় করব- সেটাই তো করা উচিত।

নতুন সিরিজে বা সিনেমার সুখবর দেবেন কি?

কথা হচ্ছে। তবে এখনো চূড়ান্ত নয়। আমি কোনো কিছু চূড়ান্ত না হলে কথা বলতে চাই না। সেটা শুধু শুধু সময় নষ্ট। আমি দুই-এক বছর বুঝেশুনে কিছু কাজ করতে চাই। এক্সিপেরিমেন্ট কিছু কাজ করতে চাই। এমনও হতে পারে রেগুলার কিছু সিরিজ করছি।

তারকাদের প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদ-সন্তান নিয়ে অভিমত?

আমি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

ভবিষ্যতে সম্পর্ক, বিয়ে করা নিয়ে ভাবছেন?

আপাতত নয়। আমি আর মেয়ের মাঝখানে নতুন কাউকে নিয়ে চিন্তার করার এখনো সুযোগ হয়নি। তবে ভবিষ্যতে কী হবে- সেটা বলতে পারব না। মানুষের জীবনে ইমোশনাল সাপোর্টের জন্য পার্টনার দরকার হতেই পারে। সেটা অন্য বিষয়। আগে গৎবাঁধা মানুষ ছিলাম। এখন মেয়ে ও আমাকেই নিয়ে ভাবী। এখন চিন্তারও পরিবর্তন হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর