আওয়ামী লীগে ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টি এবং ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র সংশোধন জরুরী।
যতই বলা হউক ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নয়, এটি সহযোগী সংগঠন। এসব আসলে কিতাবি কথা। আওয়ামী লীগ মিটিং করে যে সংগঠনের কমিটি গঠন কিংবা নেতা বাদ দেয়, সেটি কোনভাবেই সহযোগী সংগঠন নয়। তাই ছাত্রলীগের ভুল বা অন্যায়ের দায় এসে আওয়ামী লীগের উপর বর্তায়। এই বাস্তবতা এড়িয়ে যাওয়ার কোন মানে নেই।
ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি বদলে দিলেই সংগঠন সুশৃঙ্খল হয়ে যাবে এমন আশা করা উচিৎ কাজ নয়। এতে করে সাময়িকভাবে লাগাম টানা গেছে, এর বেশী কিছু না।বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্তে মানুষ সাময়িক স্বস্তি পেলেও, এটা আসলে সমাধান নয়। সমাধানের পথ আমাদের খোঁজা উচিৎ।
আমি মনে করি, আজকের বাস্তবতায় আওয়ামী লীগে ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক থাকা উচিৎ। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটি এবং জেলা মানের সকল কমিটিতে স্বাক্ষর করবেন। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির নিকট সংগঠনে সকল রিপোর্ট দিবেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হলেই যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলে যাওয়া যায়, তখন তারা শরীরের পশ্চাৎদেশের নিচ দিয়ে আকাশ দেখা শুরু করে! বর্তমান যুগের ছাত্ররা এই গরম সহ্য করতে পারে না!
সবচাইতে বেশী প্রয়োজন ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র সংশোধন। এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি কোনভাবেই ৭১ এর অধিক হওয়া উচিৎ না। জেলা ও থানা কমিটি হতে হবে আরও ছোট।
কমিটি গঠন কিংবা অন্য যে কোন ক্ষেত্রে কোন ভাবেই গঠনতন্ত্রের সামান্যতম হেরফের করা যাবে না। নেতার ইচ্ছামত কিছু করা গেলেই গঠনতন্ত্র মূল্যহীন হয়ে যায়।
ছাত্রলীগের দেখাদেখি আওয়ামী লীগেও গঠনতন্ত্র অমান্য করা শুরু হয়েছে, বুড়িচং থানা আওয়ামী লীগ কমিটি গঠন হয়েছে শতাধিক লোক দিয়ে এমপির নির্দেশে!
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কমিটি গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে অর্ধশত লোক অতিরিক্ত ঢুকিয়েছেন সভাপতি। সেখানে আগে যারা জন্মদিন পালন করতেন তারা শোক দিবস পালন করছে ১৫ আগষ্টে!! তাই এখন আনন্দের সাথে শোক দিবস পালিত হচ্ছে!
আদর্শ রাষ্ট্রের জন্য যেমন সংবিধান, আইন এবং সুশাসন লাগে, তেমনি আদর্শ সংগঠন গড়ে তোলার জন্য গঠনতন্ত্র থাকা ও মান্য করা অত্যন্ত জরুরি।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: কুমিল্লার স্পেশাল পিপি (জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল), সাবেক সহ-সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি এবং কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল