১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৯:১৩

'আমি নিজের সৌভাগ্যে ভড়কে গেলাম'

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

'আমি নিজের সৌভাগ্যে ভড়কে গেলাম'

ভালোবাসা কোথায় কোন দ্রাঘিমায় অ্যামবুশ করে বসে আছে, সেটা আপনি জানতেও পারবেন না। আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি, এইরকম সম্ভাব্য-অসম্ভাব্য জায়গায় ভালবাসার দ্বারা আক্রান্ত হই বলে। এটা আমার মাহাত্ম্য নয়, এটা ভালোবাসা দাতার মাহাত্ম্য।

দুই বছর আগে, মিলানে গেছি ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে। গিয়েই জ্বর-সর্দিতে কাবু। খাওয়া দাওয়া মুখে রোচে না। একদিন সকালে হোটেলের রিসেপশন থেকে ফোন। বাংলাদেশ অ্যামব্যাসি থেকে কেউ একজন এসেছে। খানিকটা অবাক। কারণ আমি সম্ভবত মোস্ট বেসরকারি লোক। আমার কাছে অ্যামব্যাসির লোক কেনো আসবে? পরিষ্কার বুঝতে পারলাম কোনো একটা গোলমাল হয়েছে। যাই হোক, বললাম, পাঠিয়ে দিন।

অপেক্ষা করে বসে আছি, কেউ আর আসে না। যেই কম্বলের নীচে ঢুকতে যাবো, বেল বাজলো। দরজা খুলে দেখলাম এক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে হাতে বিশাল ব্যাগ। জানতে চাইলাম, কি বিষয়? উনি বললেন, কনসুলার ম্যাডাম ফেস্টিভ্যাল কর্তৃপক্ষ মারফত জানতে পেরেছেন আপনি অসুস্থ, কিছু খেতে পারছেন না, তাই এগুলো রান্না করে পাঠিয়েছেন। আমি নিজের সৌভাগ্যে ভড়কে গেলাম এবং কৃতজ্ঞ বোধ করলাম অজানা, অচেনা সেই কনসুলার ম্যাডামের প্রতি।

আচ্ছা উনারা না হয় বাংলাদেশের, কিন্তু নিউইয়র্কে যে এয়ার বিএনবিতে আমি থাকলাম গত একমাস সেখানে কেনো ভালোবাসা আমাকে অ্যামবুশ করবে? এটা তো কোনোভাবেই আমার মাহাত্ম্য হতে পারে না। এটা নিশ্চিতভাবেই "ব্লেসিংস"!

এখানে যে বাসায় আজ একমাস আছি, সেই ভদ্রমহিলা ক্যারিবিয়ান। কিছুদিন না যেতেই উনি আমি কি কি খেতে পছন্দ করি খোঁজ নিয়ে রান্না করতে শুরু করলেন। এবং আক্ষরিক অর্থেই প্রতি দুই দিন পরপর রান্না করে পাঠাতে থাকলেন। আজকে আমার ফ্লাইট। দেখি উনি রান্না করে হাজির। পরিমান দেখে বললাম, আজকে তো আমি একা। কে শেষ করবে এই খাবার? উনি বললেন, উনি বেশি করে রেঁধেছেন যাতে অর্ধেক খেয়ে বাকি অর্ধেক আমি বিমানে নিয়ে যাই। সেজন্য তিনি একটা বিশেষ বক্সও কিনে এনেছেন। বিমানের খারাপ খাওয়া যেনো আমি না খাই, সেজন্যই উনি এই ব্যবস্থা করেছেন।

এরপরও আমি সৃষ্টিকর্তার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবো?

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক: নির্মাতা

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর