শিরোনাম
১৮ মার্চ, ২০২০ ১২:২৭

‘‘বাংলাদেশিদের কাছে জরুরি অবস্থা ব্যাপারটা অন্যরকম’’

শওগাত আলী সাগর

‘‘বাংলাদেশিদের কাছে জরুরি অবস্থা ব্যাপারটা অন্যরকম’’

শওগাত আলী সাগর

মঙ্গলবারের সকাল বেলায়ই অন্টারি ওর প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ড প্রভিন্সে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। সবচেয়ে জনবহুল এবং ব্যবসা বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রভিন্সে জরুরি অবস্থার ঘোষণা অনেককেই চমকে দেয়। আগের দিনই প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আমেরিকা, মেক্সিকো ছাড়া বিদেশিদের কানাডায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন এবং সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান। ফেডারেল সরকারের এই আহ্বান নাগরিকদের মধ্যে একটা চাপ তৈরি করে। সেই চাপ নিয়েই সোমবারের রাতে সবাই ঘুমাতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবারের সকালে ঘুম থেকে উঠেই সবাই জানতে পারেন প্রভিন্সে জরুরি অবস্থায় জারি হয়েছে।

জরুরি অবস্থার খবরে অনেকের মধ্যেই আতংক তৈরি হয়। জরুরি অবস্থা সত্বেও অনেক কিছুই স্বাভাবিক দেখে অনেকেই আবার দ্বিধায় পরে যান। বাংলাদেশিদের কাছে জরুরি অবস্থা বা ইমার্জেন্সী ব্যাপারটা অন্যরকম, অবশ্যই ভীতিকর। বাংলাদেশের ইমার্জেন্সী মানে হচ্ছে সংবিধান স্থগিত করে দেয়া, সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া। তার সঙ্গে অবশ্যই শহরে কার্ফ্যু জারি করা। কার্ফ্যু মানেই তো ঘরে বন্দি থাকা। সকাল থেকে অনেকেই ফোন করে জানতে চান, ইমার্জেন্সী মানেই তো শহরের কোনো কিছু খুলবে না, বাইরে যাওয়া যাবে না।
এখানকার স্টেট অব ইমার্জেন্সী বা জরুরী অবস্থাটা আসলে বাংলাদেশের জরুরী অবস্থার মতো ব্যাপার না। ফেডারেল সরকারের জন্য ইমার্জেন্সী এক্ট নামে একটা আইন আছে। এই আইনের আওতায় সরকার তাৎক্ষনিকভাবে প্রয়োগের জন্য বাড়তি ক্ষমতা পেতে পারে। 

প্রভিন্সগুলোর জন্যও তেমনি আলাদা আলাদা আইনি ব্যবস্থা আছে।
অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ড প্রভিন্সে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছেন 'ইমার্জেন্সী ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সিভিল প্রোটেকশন অ্যাক্ট' এর ৭.০(১) অনুচ্ছেদের আওতায়। জরুরি অবস্থা ঘোষণা মাধ্যমে আসলে প্রভিন্সিয়াল সরকার জনগণের স্বার্থে যৌক্তিক যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তার প্রয়োগের ক্ষমতা পেয়েছেন। এই জরুরি অবস্থার সাথে কোনো কিছু বন্ধ থাকা বা না থাকার কোনো সম্পর্ক নাই। জরুরি অবস্থা জারির কারনে প্রভিন্স জনস্বার্থে কোনো প্রকিষ্ঠান বা কোনো উদ্যোগ আয়োজন, বন্ধ বা নিষিদ্ধ করার সরাসরি ক্ষমতা পেলো মাত্র। সেটি প্রয়োগের উপর নির্ভর করবে কি বন্ধ হবে আর কি খোলা থাকবে।
আলবার্টা এবং ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় জরুরি অবস্থা নয়, ‘হেলথ ইমার্জেন্স ‘ ঘোষণা করা হযেছে। সেটি করেছেন সেখানকার প্রধান চিকিৎসক। হেলথ ইমার্জেন্সীর আওতায় সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগ যে কোনো ব্যক্তিকে জনস্বার্থে যে কোনো নির্দেশ দেওয়ার, যে কোনো স্থাপনায় নিজেদের এখতিয়ার প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা পেল।

জরুরী অবস্থা কিংবা কাছাকাছি ‘ওয়েলফেয়ার ইমার্জেন্সী; জাতীয় কিছু একটা ঘোষণার জন্য বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ ফেডারেল সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। তবে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটির প্রধান ক্রিষ্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, জরুরি অবস্থা হচ্ছে শেষ পদক্ষেপ। সেটি ব্যবহারের আগে আমরা অন্যান্য অপশনগুলো খতিয়ে দেখতে চাই।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক: প্রকাশক ও সম্পাদক, নতুন দেশ ডটকম।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর