১২ এপ্রিল, ২০২০ ০৭:৫৬

আগে বাঁচুন এবং বাঁচান

ফারহানা নীলা

আগে বাঁচুন এবং বাঁচান

ফারহানা নীলা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ডাক্তার, নার্স সবাই কোয়ারেন্টাইনে। তথ্য গোপন করে রোগী ভর্তি এবং মৃত্যু.... কোভিড ১৯ পজিটিভ পাওয়া যাওয়ায় সবাই কোয়ারেন্টাইনে। এমন অনেক রোগী ইতিহাস লুকিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছেন.... সবার জন্য ভয়ংকর এই বিষয়।

এ্যাপোলো হাসপাতালের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ৪৪ জন কোয়ারেন্টাইনে।

নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন আক্রান্ত। অনেক ডাক্তার আক্রান্ত। অনেকে কোয়ারেন্টাইনে। তিনজন আইসিইউতে। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ছয়জন ডাক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত।

এই যুদ্ধে সবাইকে যদি কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়, সবাই যদি আক্রান্ত হতে থাকে তাহলে সতেরো কোটি মানুষের চিকিৎসা করারা যোদ্ধা পাওয়া যাবে না। ডাক্তারকে শত্রু না বানিয়ে যোদ্ধার মর্যাদা দিতে শিখতে হবে। যারা কোয়ারেন্টাইনে, তাদের মানসিক অবস্থা একবার ভাবুন। তার পরিবারের মানসিক অবস্থা উপলব্ধি করুন। পরিবার পায়ে পায়ে বেড়ি পড়ায়। কেউ প্রিয়জন হারাতে চায় না।

একজন ডাক্তার সব কিছু উপেক্ষা করে দিনের পর দিন রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। একজন নার্স তার ছোট ছোট বাচ্চার উষ্ণ আদর রেখে রোগীর সেবা দিতে যাচ্ছেন। যারা করোনা আক্রান্ত রোগী দেখছেন.... তারা দিনের পর দিন বাড়িতে আসতে পারছেন না। তারা কি খাচ্ছেন, কোথায় থাকছেন?.... আপনারা কি একবারও জানতে চেয়েছেন?

আপনার জন্যই এখন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষা জরুরি। তাদের মনোবল জিইয়ে রাখা জরুরি। আপনারদের জন্যই তাদেরকে সুস্থ রাখা জরুরি। কারণ আক্রান্ত হলে আপনাকে আর কেউ দেখতে আসতে পারবে না। আপনার পরিবারও কোয়ারেন্টাইনে চলে যাবে।

এটা একটা চরম বিপর্যয়, এই বিপর্যয়ে ডাক্তারের পাশে থাকুন। সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিন আপনার জন্য, আপনাদের জন্য।

এটা সমালোচনার সময় নয়, এটা দোষ খোঁজবার সময় নয়। এখন বেঁচে থাকার লড়াই.... এই লড়াইয়ে আপনার সাথে আছেন ডাক্তার, নার্স আর স্বাস্থ্য কর্মী।

আর কতদিন এই যুদ্ধ চলবে জানি না। আর কতদিন এমন অস্বাভাবিক জীবন যাপন জানি না। খুব চাই এ আঁধার কেটে যাক। তখন না নিক্তি বাটখারা নিয়ে বসবেন..... আপতত আপনার জন্য যারা আছে, তাদেরকে সুস্থ রাখুন।

মিথ্যা তথ্য দেবেন না। তথ্য গোপন করবেন না। দেশ ও দশের ক্ষতি করবেন না। নিজেকে নিজের সন্দেহ হলে সেটাও বলুন খুলে। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য.... অন্ততপক্ষে একবার সত্যি বলুন।

বেঁচে থাকলে মিথ্যে বলে পুষিয়ে নেবার সুযোগ হয়তো পাবেন। আগে বাঁচুন, এবং বাঁচান।

আপনি চিন্তাও করতে পারছেন না..… মিথ্যে ইতিহাস আর তথ্য গোপন করে কতটা ক্ষতি করছেন!
আর একবার বিবেককে জাগান.... ক্ষতিটা কার?

লেখক: চিকিৎসক ও লেখক।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর