১৩ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:৫৮

''আমার ধারণা ছিল জনপ্রতিনিধিরা মোটামুটি স্বচ্ছল হয়ে গেছেন''

আনিসুর রহমান মিঠু

''আমার ধারণা ছিল জনপ্রতিনিধিরা মোটামুটি স্বচ্ছল হয়ে গেছেন''

আনিসুর রহমান মিঠু

ভুখা মানুষের ত্রাণ লুটের খবর বিপদ সংকেত। জনপ্রতিনিধিদের অসততা নিরন্ন ভুখা মানুষকে, অসহিষ্ণু করে তুলছে! বিষয়টি হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। আমার ধারনা ছিল জনপ্রতিনিধিরা মোটামুটি সচ্ছল হয়ে গেছেন ইতিমধ্যে। তারা অন্তত আর ত্রাণ চুরি করার পর্যায়ে নাই। তাদের এখন গাড়ি-বাড়ি, টাকা-পয়সা যথেষ্ট হয়েছে! 

করোনা আমলে বিশ্বময় মানুষ যখন আতঙ্কিত, সেই কঠিন দুঃসময়েও কেউ কেউ গরীবের আহার চুরি করবে ভাবাই যায় না। চোরেরা জনপ্রতিনিধি কেন হয়? কীভাবে হয়? কার প্রশ্রয় ও সহযোগিতায় হয়? বড় নেতারা কেন তাদের এগিয়ে এনে ক্ষমতায়িত করেন? তারা দলের জন্য এতো প্রয়োজনীয় কেন? 

বড় নেতারা সাধারণত তাদের পরিবারের লোকদের নেতা বানাতে চায়!  যে সকল জায়গায় পরিবারের কাউকে পাওয়া যায় না সেখানে তারা - সাবেক ছিনতাইকারী, মাদকসেবী অথবা ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, চাঁদাবাজ, মাস্তান এবং স্বল্পশিক্ষিত লোক খুঁজে এনে বসায়!  

(যাতে ভবিষ্যতে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের সামনে প্রতিবন্ধকতা না থাকে! )

অযোগ্য অথর্বদের কাছ থেকে সহজেই জিন্দাবাদ পাওয়া যায়, তাই বিবেকহীন অযোগ্য কর্মীরাই নেতাদের প্রথম পছন্দ!

এ চিত্র বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি উপজেলায়! উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি /সাধারণ সম্পাদক যারা এমপির আত্মীয় নন, তাদের এমপির আত্মীয়দের চাকরের সাথে সুসম্পর্ক রেখে রাজনীতি করতে হচ্ছে!

আমার ধারনা নেত্রীর বিশেষ একটি ভুল ধারনা আছে বা সবাই মিলে নেত্রীকে একটি ধারনা দিয়েছেন যে, মন্ত্রী বাদ দিয়ে দিলে সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়! তাই তিনি অযোগ্য, অকর্মণ্য, দুর্নীতিপরায়ণ মন্ত্রীকেও বাতিল করতে চান না! তবে পরের বার তাকে আর মন্ত্রী বানান না।

ভাগ্য ভালো যে রিলিফ চোর ধরার ক্ষেত্রে তিনি এমন ধারনা পোষণ করছেন না। তিনি আন্তরিকতার সাথেই চোরদের গ্রেফতার করাতে চাচ্ছেন। তিনি পরিষ্কার বলেছেন, চোরের কোন দল নাই, চোর হচ্ছে চোর, রিলিফ চোরদের কোন রকম ছাড় দেয়া হবে না।

তবে স্থানীয় নেতারা তাদের সাধ্যমত চোরদের আগলে রাখছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চোরেরা ধরাও পড়ছে না, সংবাদও হচ্ছে না! 

নেত্রী যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিলেন, তা যদি চলমান থাকতো, রাঘব বোয়াল, লুটেরা, ঘুষখোর, টেন্ডারবাজ, কালোবাজারিরা যদি ধরা পড়তে থাকতো, তাহলে আজ আর কেউ রিলিফ চুরির কথা ভাবতো না।

কয়েকজন নেতাকে পদচ্যুত করা আর কয়েকজনকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে , শুদ্ধি অভিযান সমাপ্ত না হয়ে গেলে, রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আসতোই।

আজ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিরন্ন ক্ষুধার্ত মানুষেরা রিলিফ কেড়ে নিতে শুরু করেছে। লকডাউন প্রলম্বিত হলে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে ।

করোনায় মৃত্যু মানুষ মেনে নেবে, কিন্তু পেটের ক্ষুধায় শিশু সন্তানের বা বৃদ্ধ বাবা মায়ের মৃত্যু মানুষ সহ্য করবে না।

সরকারী সকল ত্রাণ তৎপরতা সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই হওয়া উচিত। কারণ তৃনমূল পর্যায়ে মর্যাদাবান জনপ্রতিনিধি খুবই কম।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর