২৯ এপ্রিল, ২০২০ ১২:৪১

আমার বাবার ক্ষেত্রে ভাগ্য সহায় হয়নি, ফেসবুকে ড. সা’দত হুসাইনের ছেলে

অনলাইন ডেস্ক

আমার বাবার ক্ষেত্রে ভাগ্য সহায় হয়নি, ফেসবুকে ড. সা’দত হুসাইনের ছেলে

ড. সা’দত হুসাইন

মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব ও পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. সা'দত হুসাইন গত ২২ এপ্রিল রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। কভিড-১৯ করোনাভাইরাসের এ সময়ে অন্য রোগীদের কতটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় তা নিয়ে ২৭ এপ্রিল ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ড. সা'দত হুসাইনের ছেলে শাহজেব সাদাত। স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হল: 

অসুস্থ হবার সময় এটা না...গত কয়েকদিন বাবা হারিয়ে আর অসুস্থ মা এর কারণে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কিন্তু আশা করি, যেন কাজে না আসে কারো এই লার্নিংগুলো...পরিবার ও আপনি যেন সুস্থ থাকেন।

১. তদবির না করলে আইইডিসিআর থেকে সহজে নমুনা সংগ্রহ করতে আসে না কেউ। তাই নমুনা সংগ্রহ করতে হতে পারে হাসপাতালে ভর্তির জন্য, এরকম পরিস্থিতি যত আগে সম্ভব যোগাযোগ করুন দেরি না করে।

২. যে হাসপাতালে নেন, নমুনার ফলাফল না আসা পর্যন্ত ডাক্তাররা কোভিড রোগী হিসেবে ট্রিট করবে আপনার রোগীকে। এটা মূল রোগের ডায়াগনোসিস ও ট্রিটমেন্টকে বিলম্বিত করবে। রোগীর রোগের ধরনই যদি এমন হয় যে দ্রুত উপযুক্ত চিকিৎসা লাগবে, সে ক্ষেত্রে ভাগ্য আপনার সহায় হউক। আমার বাবার ক্ষেত্রে ভাগ্য সহায় হয়নি। ডায়াগনোসিস, ট্রিটমেন্ট দুই-ই দেরি হয়ে গিয়েছিল।

৩. রোগীর যদি কোনক্রমে শ্বাসকষ্ট হয়ে যায়, প্রায় প্রতিটি প্রাইভেট হাসপাতালই এডমিশন নিতে গড়িমসি করবে এবং এই সময়ে তদবিরেও কাজ হবে না। বাবা হাসপাতালে থাকার একই সময়ে আমার মায়েরও এ্যানেমিয়া হার্ট অ্যাটাকের কারণে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা হওয়ায় ৩/৪ টি হাসপাতাল ঘুরেও এ্যাডমিশন হচ্ছিল না।পরিচিত ডাক্তারের সহায়তায় শেষ মেষ মোটামুটি মানের একটা হাসপাতালে জায়গা হয়, না হলে অ্যাম্বুলেন্সেই মাকে হয়তো হারাতে হতো বাবার সাথেই। কাজেই হাসপাতালের সাথে তর্ক না জুড়ে বরং চেষ্টা করুন কোন হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে, সেটা মোটামুটি হলেও।

৪. প্রাইভেট হাসপাতালে নিলে সেটি কোভিড-১৯ এর জন্য ডেডিকেটেড হোক না হোক, ডাক্তারদের পিপিই এর বিল আপনার ঘাড়ে আসবে, মেডিকাল ডিসপোজিবলস হেডিং এর ভিতর। তাই বিল দেখে শক একটু লাগতে পারে, প্রস্তুত থাকুন। এটি সব প্রাইভেট হাসপাতালের পলিসি নাকি সেটা জানি না অবশ্য।

৫. প্রয়োজনীয় ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞদের একসাথে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। কেউ ছুটিতে, কেউ আসা বাদ দিয়েছে, কেউ ২/৩ দিন আসে। একটু কম অভিজ্ঞদের হাতে মাঝেই মাঝেই ছেড়ে দিতে হবে আপনার রোগীকে এই সময়ে।

৬. পরিশেষে...এটা অসুস্থ হওয়ার সময় না, করোনাভাইরাসে ধরলে এক সেন্সে কোন না কোন হাসপাতালে হয়তো এ্যাডমিশন পেয়েও যেতে পারেন, সুস্থও হয়ে যাবেন হয়তো ঘরে থেকেও। কিন্তু নন করোনা কোন রোগের সময় এটি না... বিশেষ করে একটু জটিল ধরনের কিছু হলে। তাই সুস্থ থাকেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান...যাতে হাসপাতাল থেকে, ডাক্তার থেকে দূরে থাকতে পারেন শত হস্ত।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর