ব্যক্তিজীবন, শিক্ষাজীবন এমনকি কর্মজীবন কোনোটাতেই সাকসেস না হতে পারায় সোহাগের মনে অনেক কষ্ট! মনের কষ্টে বলছিল সে, স্যার আমার জীবন এতটা আনসাকসেসে ভরা কেন?
ছাত্রজীবনে সোহাগ এসএসসির টেস্টে ফেল করায় পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে জীবনের প্রথম আনসাকসেস হয় সে। তবে এসএসসির গন্ডি না পেরোলেও কথাবার্তায় যথেষ্ট স্মার্ট সোহাগ।
পড়াশোনায় আনসাকসেস হয়ে সে প্রেমের দিকে নজর দেয়। বারবার বিভিন্ন মেয়ের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অর্থাৎ আনসাকসেস হয়ে ভেঙে পড়লেও দমে যায়নি সোহাগ।আনসাকসেসের পাল্লা বেশি ভারি হওয়ার আগেই একজনকে বিয়ে করে ফেলে সোহাগ। কিন্তু সেখানেও আনসাকসেস হয়ে যায় সে! নিজের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভেঙে যায় সোহাগের সংসার!
ভাগ্যের চাকা ঘুরোতেই হবে সোহাগকে। এবার সে যোগ দেয় মাদক ব্যবসায়। সোহাগের অনুযোগ, সাকসেস তো দূরের কথা কোনোরূপ শান্তি পায়নি সেখানেও।
সকালে পুলিশের দৌড়ানি তো বিকালে মাদকসহ আ্যরেস্ট। হাজত খেটে বের হয়ে কোনোরকম ব্যবসা খাড়া হওয়ার আগেই আবার অ্যারেস্ট। সর্বশেষ ৭৬ দিন হাজতবাস হলো সোহাগের।
সোহাগ দমবার পাত্র নয়। কারণ সে জানে, ‘ফেইলর ইজ দ্য পিলার অব সাকসেস’। জেলখানায় সোহাগের সাথে পরিচয় হয় কিছু কুখ্যাত চোরের।
সবাই আগেপিছে জেল থেকে বের হয়ে এসে সোহাগরা কয়েকজন মিলে গঠন করে ‘চুরি টিম’। চোর সম্প্রদায়সহ দিনেরবেলা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে সুযোগ বুঝে তালা ভেঙে চুরি করবে বলে নিয়ত করে সোহাগ।
কথাবার্তায় স্মার্ট সোহাগের আক্ষেপ, এত রিস্ক নিয়ে কাজ করে প্রথমদিন মাত্র ২৫০০/ টাকা ভাগে পায় সে। অর্থাৎ এখানেও আনসাকসেস সে! তার আনসাকসেসের পর্বটা এখানে থেমে থাকলেও চলতো। কিন্তু সোহাগের এবারের আনসাকসেস ভাগ্যটা বড়ই নির্মম!
দ্বিতীয়বারের মতো চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে সোহাগ! তার আনসাকসেসের কারণে এলাকাবাসী ধরে ফেলে ফ্রি ফ্রি কিছু আদর-যত্ন করে পুলিশে তুলে দেয় সোহাগকে।
এত এত আনসাকসেসের পরও সোহাগের শেষ সাকসেসের চেষ্টা, ‘স্যার একটা ছোট মামলা দিয়েন’! অর্থাৎ এত আনসাকসেসের পরও সোহাগ আবারও অসৎ লাইনে দাঁড়িয়ে তার জীবনের সাকসেস দেখতে চায়।
শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও সোহাগ সাকসেস নামের বিষয়টাকে ধরতে চাইলেও, সন্দেহ নেই এখানেও আনসাকসেস হবে সোহাগ। সোহাগের আনসাকসেসের গল্পটি এখানেই শেষ হলো।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পল্লবী থানা, ডিএমপি
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ