৬ আগস্ট, ২০২১ ১১:১০

শোনা কথায় নাচানাচি করার আগে একবার ভাবুন...

এমি জান্নাত

শোনা কথায় নাচানাচি করার আগে একবার ভাবুন...

এমি জান্নাত

অন্যের চরিত্র বিশ্লেষণ করা মানুষের একটা স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তবে সেই বিশ্লেষণ খুঁত ধরার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়।

খাস বাংলায় যদি বলি, কথা নাই, বার্তা নাই, বইলা ফেললেন অমুক খুব খারাপ! কিন্তু দেখা গেল আপনি তারে জানা তো দূর, ঠিকমতো চেনেনও না।

একটা কৌতুক টাইপ কথা শুনেছিলাম অনেক আগে- দুই বন্ধুর আলাপচারিতায় একজন আরেকজনকে বলছে, পরোটা দিয়ে মিষ্টি খাইতে অনেক মজা! অন্যজন বললো, তুই কেমনে জানলি?

উত্তর ছিল আমার বড় ভাই একজনকে খাইতে দেখছিল!

কাউকে ব্যক্তিগতভাবে না চিনে, না জেনে লোকমুখে শুনে কারও ব্যাপারে সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যাপারটাও অনেকটা এরকম। সমাজে যারা বড় বড় ভূমিকা নিয়ে বিলং করে তাদের নামও বেশি, সুনামও বেশি তাই বদনামও বেশি। কারণ কী? সবাই তাদের না জানলেও অন্তত নামে চেনেন। তাই একটা নেগেটিভ কিছু পাইলে চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে দৌড়ানোর মতো সবার সুরে গান ধরেন। তাকে খারাপ হিসেবে যতটা না বিশ্বাস করেন তার চেয়ে বেশি মুখে বলেন আর সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপাইয়া ফেলেন! 

To be honest, বলেন তো আপনি কেমন? সেটা যদি বাদও দেই, কে আসলে সম্পূর্ণ স্যানিটাইজার দিয়ে ধোয়া তুলসীপাতা! যে যার যার স্ট্যাটাস থেকে নিজের ভালো-খারাপটা মেইনটেইন করে যেমনে পারে। আরে, মনটা দেখেন না! যদি কারও মনের ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারেন তাইলে বইলা দিতে পারেন- অমুক এই, তমুক সেই!

যারা মানুষের ভালো দিকটা খুঁজতে জানে, একমাত্র তারাই ভালো কথাটা বলতে পারে। দুঃখের কথা হলো এই চরিত্র বিশ্লেষকদের চরিত্র হলো নিজেরে বিশাল গুণধর মনে করে তারা স্বান্তনা পায় আর মনের মাধুরি মিশাইয়া অন্যকে তুলোধুনো করতে থাকে! আর হাস্যকর হলো, একজনকে চেনেই না! খালি নাম শুনছে বা পত্রিকায় ছবি দেখছে অথবা কখনও টিভিতে দুই একবার দেথেছে। কিন্তু এমনভাবে তার সম্পর্কে বিবরণ দেবে যেন হাজার বছর তাহার সাথে ছিল পরিচয়!

একটা মানুষ সম্পর্কে অন্যের থেকে শোনা কথায় নাচানাচি করে আজেবাজে কথা বলে সোশ্যাল মিডিয়ার মঞ্চ কাঁপানোর আগে একবার ভাবেন, কতটুকু চেনেন তাকে! কী জানেন তার ব্যাপারে? যদি ধরেও নিই সে খারাপ কিছু করছে, তার নেপথ্যের গল্প একটু হলেও জানেন কি না! আর তার আগে ভাবেন নিজের একটা বাজে মন্তব্যের জন্য আপনার চরিত্র সম্পর্কে অন্যরা কী ধারণা পোষণ করতে পারে!

আর আপনার চেনা জানা কেউ শত খারাপ হলেও সেটা ফলাও করে বলতে গিয়ে নিজের ‘ইমেজ’ নামের যে বস্তুটা আছে সেটা নিচে নামাইয়েন না। ভাবতেছেন জ্ঞান দিতে আসছে! জ্ঞান অর্জনের কোনও শেষ নেই, বয়সও নেই।

আমি যেন মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত শিখি, এইটা আমার নীতি। তাই এহেন মানুষদের একটু না হয় দিলাম জ্ঞান! অনেকে নিজে উপলব্ধি করতে না পারার কারণেও “Subconscious mind”-এ এসব “unnecessary” কাজকর্ম করে থাকেন। তাই এতে যদি একজনেরও টনক নড়ে মানে বিবেক জাগ্রত হয়, আমি ধন্য!

লেখক: সংবাদকর্মী
 

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর