১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২১:৩৪

কারো পোশাক দেখেই ভাববার কোনো কারণ নেই তিনি সাহায্যপ্রার্থী!

ইফতেখায়রুল ইসলাম

কারো পোশাক দেখেই ভাববার কোনো কারণ নেই তিনি সাহায্যপ্রার্থী!

ইফতেখায়রুল ইসলাম

গতকাল রাতে এক রেস্তোরাঁয় কয়েকজন মিলে খেতে বসেছিলাম। আমাদের টেবিল থেকে প্রায় ২৫ হাত দূরে এক টেবিলে মলিন চেহারার একজন বয়স্ক লোকসহ আরও দু’জন বসে ছিলেন।

মলিন চেহারার ভদ্রলোক ৭-৮ মিনিটে প্রায় ৪০ বারের মত তাকিয়েছিলেন আমার দিকে। আমি তখন খাচ্ছিলাম। তাঁদের টেবিলে অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরও খাবার না দেখে আমি হাত দিয়ে ইশারা করে দেখালাম খাবার কোথায়? তিনিও পেছন দিকে হাত দিয়ে দেখালেন কিছু একটা। মনে হলো খাবার আসছে হয়তো! 

আরও কিছুক্ষণ অতিবাহিত হতে আমি ওয়েটারকে বললাম উনাদের টেবিলে খাবার নেই কেন? ওয়েটার বললো আরেকজন লোক আসবে, তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে। ওয়েটারকে বললাম আমাদের এখান থেকে কয়েক টুকরা মাছ উনাদের দিয়েন। ভাইয়া বললো একটা নতুন মাছ কেটেই রান্না করে দিক- আর আমার স্ত্রী বললো যদি ফিরিয়ে দেয়, হোটেলে খেতে আসছেন নিশ্চয়ই টাকা নিয়েই এসেছেন!  

একটুপরই দেখলাম তাঁদের আরেকজন লোক চলে এসেছেন। এরপরই তাঁদের টেবিল খাবারে কানায় কানায় ভরে উঠলো! চারজন মনে হয় আমাদের চেয়েও বেশি খাবার অর্ডার করেছে। পরে দেখি ওই মলিন চেহারার ভদ্রলোক তাঁর নতুন সাথীকে আমাকে দেখিয়ে বলছে, যে উনি হাতের ইশারায় খাবার কোথায় জিজ্ঞেস করেছে! আমি আর ভুলেও তাকাই নাই ওখানে।
 
যে ভুলটা করে ফেললাম বহুদিন পর তা হলো, যে কারো পোশাক ও মলিন চেহারা দেখেই ভাববার কোনো কারণ নেই যে, তিনি সাহায্যপ্রার্থী! জাজমেন্টাল সমাজের প্রতিনিধি হয়ে আমিও সেই ভুলই করে বসলাম। মানুষ মাত্রই ভুল- ভেবে নিজেকে শান্তনা দিচ্ছিলাম। আল্লাহই জানেন, খাবার ওখানে পৌঁছালে মলিন চেহারার বয়স্ক লোক আমাকে হাতের ইশারায় ছ্যাঁচা দেখাতেন কিনা...

লেখক : এডিসি, ক্যান্টনমেন্ট ও খিলক্ষেত, ডিএমপি।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর