আমাদের সিনেমাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে পরিমাণ চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তা আর কোনো ব্যবসাকে করতে হয় বলে আমার অন্তত মনে হয় না।
এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, সিনেমা শুধু আর্ট নয় এটা বাণিজ্যও। সব ব্যবসার মতো এটিও নানা রকমের প্রচারণা করে। কোনোটা আমাদের আকৃষ্ট করে কোনোটি করে না। সেটি প্রকাশ করার বেলায়ও আমাদের পরিমিত হওয়া প্রয়োজন।
কেউ দল বেধে সিনেমা হলে ক্যাম্পেইন করছে। করুক। কেউ সেনসিটিভ ঘটনার ছায়া নিয়ে রহস্য করছে। করতেই পারে। কেউ হেলিকপ্টার ভাড়া করছে? করতে দেন।কেউ অভিমানে কেঁদে ফেলছে। সহানুভূতি জানান। শিল্পীরা কাঁদতে পারেন না? ছবি মুক্তির আগেই বলে দিচ্ছেন এই ছবি চলবে, এই ছবি চলবে না। মুক্তির পর প্রতি শো’র সেল নিয়ে লেখালেখি করছেন। অথচ সিনেমা চলবে সপ্তাহজুড়ে। সিনেমা রিসেপশন পেতেও পারে। নাও পারে। দুদিন পর চিত্র বদলাতে পারে। এমন উদাহরণ অনেক আছে। কিন্তু আপনারা সেটা মানবেন না। ঈদের ব্যস্ততা মানবেন না। বন্যাও মানবেন না। ব্যাড পলিটিক্সও মানবেন না। কেন?
যদি খারাপ লাগে, রিভিউ দেন। সপ্তাহ পর সেল রিপোর্ট এমনিতেই প্রকাশ হয়ে যায়। কিন্তু শুরু থেকেই এত নেগেটিভিটি ছড়ায়েন না। থিয়েটার বিজনেসটাকে এভাবে আটকাতে থাকলে সেই টিভি প্রিমিয়ার না হয় শুধু ওটিটির জন্যই সিনেমা হতে থাকবে।
থিয়েটার বিজনেস যে আসল বিজনেস সেটা দুনিয়ার দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন। করোনার ধাক্কায়ও তারা সেরা সিনেমাগুলোকে ওটিটিকে দেয়নি। ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে থিয়েটার বাঁচাতে হয়। আর একটা কথা না বললে অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।
একটা সময় গর্ব করেই বলা হতো যে, সোশ্যাল মিডিয়া নতুন দিনের সিনেমাকে জাগিয়ে তুলছে। সেই সাথে এই মিডিয়া এখন শিল্পীদের ফ্যান গ্রুপ,মিডিয়ার মানুষের নানা দ্বন্দ্বের চারণভূমি হয়ে উঠেছে। তাই কারো মুভি নিয়ে সমালোচনায় মেতে উঠছে বাকি সব গ্রুপ। এটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সব সমালোচনা সাধারণের না।
কোন ধরনের সিনেমা দরকার তাও আপনার আমার প্রেসক্রিপশনের বিষয় নয়। ওপেন বিষয়। হলিউড বা তামিল ছবির কনটেন্ট দেখেন। কয়টা জীবনঘনিষ্ঠ সিনেমা পান?
দর্শকদের ওপর নেগেটিভিটি চাপিয়ে দিয়েন না। তাদের পছন্দমতো সিনেমা দেখতে দিন। এটা তাদের অধিকার। সিনেমাকে গতিশীল করতে সমর্থন দিন। টিকিট কেটে দেখুন আমাদের সিনেমা। অন্যকেও উৎসাহিত করুন।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, উপস্থাপক ও আন্তর্জাতিক পরিবেশক
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ