শিরোনাম
৮ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:৪০

সাত রকমের বিশ্রামে খুশি থাকবে মন

ডা. শুভাগত চৌধুরী

সাত রকমের বিশ্রামে খুশি থাকবে মন

প্রতীকী ছবি

পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও শরীরে ক্লান্তি রয়ে যায়, অবসাদ দূর হতে চায় না। ঘুমালেই যে বিশ্রাম হয় তা কিন্তু নয়। বিশ্রাম অনেক ধরনের। সাত ধরনের বিশ্রাম আছে। সেসব বিশ্রাম নিলে সজীব অনুভব করবেন আপনি। সেই বিশ্রামগুলো হলো:

দৈহিক বিশ্রাম : এমন বিশ্রাম হতে পারে পরোক্ষ আবার প্রত্যক্ষ। পরোক্ষ এমন বিশ্রাম মানে ঘুমান। দিবানিদ্রা নিলেন। আর প্রত্যক্ষ বিশ্রাম হল ধ্যান, ইয়োগা, হাত-পা ছোড়াছুড়ি, ম্যাসেজ। একে বিজ্ঞানীরা বলেন সঞ্জীবনী বিশ্রাম। এসব বিশ্রামে শরীরে বাড়ে রক্ত চলাচল, বাড়ে নমনীয়তা।  এমন সঞ্জীবনী বিশ্রাম খুবই জরুরি যাতে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, পড়লে উঠে দাঁড়াতে  পারেন। 

মানসিক বিশ্রাম : এটিকে মনের বিশ্রাম বললেও চলে। এই যে আপনার পাশে  সহকর্মী, ঢাউস এক কাপে কফি নিয়ে বসেছেন, চুমুক দিচ্ছেন শেষ হলে আবার ভরছেন। সারা দিন ত্যক্ত-বিরক্ত মেজাজ। ভুল হচ্ছে কাজে। মনোযোগ নেই। বসে আছেন তো বসেই আছেন, নড়ন চড়ন নেই। রাতে বিছানায় ঘুমিয়েছেন, সারা রাত এপাশ ওপাশ, সারাদিনের কথা-বার্তা সব মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। একে ঘুম  বলে? ৭-৮ ঘণ্টা শয্যায় কাটালেন ঠিক , কিন্তু উঠার পর মনে হচ্ছে আদৌ ঘুমিয়ে ছিলেন তো? মানে তার মানসিক বিশ্রামের বেজায় ঘাটতি। এ ঘাটতি মেটাতে চাকরি ছাড়তে হবে না বা লম্বা ছুটিতে যেতেও হবে না। কর্মদিবসে দুই ঘণ্টা পর পর ছোট্ট করে বিরতি নিতে হবে। হাত-পা নাড়াচাড়া করুন। তাকান বাহিরে। সবুজের দিকে তাকান। দাঁড়াও। একটু পায়চারি করুন। একটু না হয় হাসলেন। অবশ্যই ভালো অনুভব করবেন।

চেতনার  বিশ্রাম: মোবাইল, কম্পিউটারের স্ক্রিন, উজ্জ্বল আলো থেকে চোখ সরিয়ে নিন, কোলাহলের মধ্যে থাকলে সেখান থেকে ছুটি নিন। চোখ বন্ধ করে থাকুন কয়েক মিনিট।

সৃজনশীল বিশ্রাম: যাদের অনেক ভেবে চিনতে সমাধান বের করতে হয় নানা সমস্যার তাদের দরকার এমন বিশ্রাম। এমন বিশ্রামে আমাদের ভেতরে যেসব অবাক  জিনিস আছে, বিস্ময় লুকিয়ে আছে সেগুলো বেরিয়ে আসে। মনে করুন কবে গিয়েছিলেন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে, ঝিনুক খুঁজেছিলেন, তখন সূর্য নামছিল আর এক পশলা  হাওয়া আপনাকে ছুঁয়ে গেল। আপনি সেদিন সেসময় কোথায় ছিলেন তাই ত আপনি অন্য ভুবনে এখন। আর একে বলে সৃজনশীল বিশ্রাম। আপনার ভাবনা আপনাকে উদ্ভাবনের জগতে নিয়ে যাবে। স্বপ্ন দেখতে শিখুন। আকাশ-পাতাল ভাবতে শিখুন। কিন্তু এর মানে কেবল প্রকৃতি দেখা নয়। কর্মস্থলে একটি দারুণ শিল্পকর্ম রাখতে পারবেন। মাঝে মাঝে তাকাবেন, ভাববেন। কাজ থেকে কিছুক্ষণের জন্য চোখ সরিয়ে নিন।

আবেগের বিশ্রাম: এ হল মনের অনুভুতি খোলাখুলি বলার সময় আর স্থান। এমন বিশ্রামে মানুষকে প্রীত করার তাগিদ নেই। মনে খুলে আলাপ করুন।  সত্য বলার সাহস থাকতে হবে। এর পর কঠিন কিছু সত্য বলা প্রকাশ করা। মনটা সাফ হল। এমন বিশ্রাম দরকার।

সামাজিক বিশ্রাম : সেসব সম্পর্ক সবকিছু আরও জটিল করে তোলে তা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। যেসব সম্পর্ক থেকে ইতিবাচক অনুভূতি ও সহযোগিতা পাওয়া যায় সেসব সম্পর্কের সঙ্গে জুড়ে থাকুন। তাহলে পাবেন সামাজিক বিশ্রাম। সরাসরি না হোক ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকুন ইতিবাচক সম্পর্কের সাথে। তাদের সঙ্গে গল্প করুন, সময় কাটান।

আত্মিক বিশ্রাম: এ যেন যেন শরীর মন পেরিয়ে আরও বাহিরে। অন্তরে অন্তরে। আমার সত্ত্বা , ভালবাসা আর লক্ষ্য অনুভব । গভীর অনুভব। করুন ঈশ্বর বন্দনা , প্রার্থনা, ধ্যান, মানুষের উপকার; এসব হোক আপনার দৈনিক রুটিনের মধ্যে। তাহলে নিজেকে আরও ভালো অনুভব করতে পারবেন। আপনি বুঝবেন- ‘ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে আছ তুমি হৃদয় জুড়ে’। ভাল থাকুন। 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর