৬ নভেম্বর, ২০২২ ১৫:০২

‘বোধ-এর উদয়’

দেবব্রত মুখোপাধ্যায়


‘বোধ-এর উদয়’

দেবব্রত মুখোপাধ্যায়

বোধ দেখতে গিয়ে আমার প্রথম যে কথাটা মনে হলো যে, অমিতাভ রেজা চৌধুরী একটা ট্যাবু ভেঙে দিয়েছেন। একটা সাধারণ ধারণা আছে যে, বড় পরিচালকরা থ্রিলার বানান না; ওটা সৃজিতদের কাজ। আলফ্রেড হিচককও এই ধারণা বদলাতে পারেন নাই! অমিতাভদা একটা দারুণ থ্রিলার বানিয়ে কিছুটা এগিয়ে দিলেন বৈকি!

তবে বোধকে কেবল থ্রিলার বললে খুব ছোট গণ্ডিতে আটকে ফেলা হয়। আমার মনে হয়েছে, থ্রিলারটা এখানে আসলে বুক কাভার মাত্র। ভেতরে আছে কয়েক লেয়ারের আমাদের এই সময়ের গল্প আর ক্রাইসিসগুলো। এই ধরেন ভূমি দস্যুতা, গুম, উন্নয়ন, আইনের মারপ্যাঁচ। এগুলোর পক্ষে বিপক্ষে আলোচনাটা জরুরি না। জরুরি হলো, এই ঘটনাগুলোকে এড্রেস করা। সেটা দারুণভাবে করেছে এই বোধ।

কখনো কখনো মনে হয়েছে, আসলে সমকালীন কোনো ডকুফিকশন দেখছি বুঝি। 
যথারীতি বোধের অভিনয়শিল্পীদের জন্য আলাদা একটা করতালি দরকার। আফজাল হোসেন তো আগেই বলেছি, দিনকে দিন কাঁচ কাটা হীরে হয়ে উঠছেন। একজন এক যুগের চকলেট বয় এখন এসে এক প্রাজ্ঞ অভিনেতা। কী অসাধারণভাবে একজন অবসর নেওয়া, মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত এবং বিচারের অপেক্ষায় থাকা মানুষ হয়ে উঠলেন তিনি।

ছোট-বড় সকল চরিত্রে দারুণ অভিনয় করেছেন সবাই। শেষ দিকে এসে হঠাৎ আবির্ভূত হওয়া রওনক হাসান পরের অংশটা ডমিনেট করেছেন রীতিমতো। ডিবিআই অফিসার এহসান চরিত্র করা অভিনেতাকে ঠিক চিনি না; তবে দূরন্ত ছিলেন তিনি।

এহসানের এই চরিত্রটা কী আরফান নিশোকে টার্গেট করে লেখা হয়েছিলো? আমার বারবার মনে হযেছে নিশোর কথা। 
এবার ছোট কয়েকটা প্রশ্নের কথা বলি। 
এহসানকে প্রথম দৃশ্যে যে ভয়ানক এরোগেন্ট দেখানো হলো, তার কন্টিনিউশন কী মিস হয়ে গেলো পরে?
একজন ডিআইজি কী লাঠিতে ভর করা বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া বয়সী হতে পারেন? আমি এ পদে আরও তরুণতরদের চিনি। 
২০১৪ সালে কি মগবাজার ফ্লাইওভার ছিলো?
এসব প্রশ্ন স্রেফ করার জন্য করা। আসলে ভেতরে অনেক কিছু আছে, যাতে সব প্রশ্ন ঢেকে যাবে। বোধটা দেখুন। তারপরও আসুন, জমিয়ে গল্প করা যাক। 
আর ডিসেম্বরে নাকি ‘কারাগার-২’ আসছে!

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক: জনসংযোগ কর্মকর্তা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর