শিরোনাম
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:২৭

অপ্রয়োজনীয় আবেগের বিস্তারে মেলে লেখার পাঠকপ্রিয়তা...

ইফতেখায়রুল ইসলাম

অপ্রয়োজনীয় আবেগের বিস্তারে মেলে লেখার পাঠকপ্রিয়তা...

ইফতেখায়রুল ইসলাম

অপ্রয়োজনীয় আবেগের বিস্তারে মেলে লেখার পাঠকপ্রিয়তা...
কিছুদিন পরপর দেখবেন কিছু বিখ্যাত কৌটেশন বিশিষ্ট লেখার প্রচলন ঘটে এবং তা বেশ পাঠকপ্রিয়তা পায়! এই যেমন  ধরেন, আপনার সন্তানকে গরীবী শেখান! এখন এই গরীবী আসলে জোর করে শেখানোর বিষয় কিনা একইসাথে গরীবীর সংজ্ঞায়ন করাও জরুরি। কোন ধরণের গরীবী আসলে শেখাবেন? আপনি যে অবস্থায় নেই, সে অবস্থাকে কিভাবে প্রায়োগিক পর্যায়ে আনবেন, সেই চিন্তা একটিবারের জন্য লেখক চিন্তা করেন না! 

আমার মা একদিন কথা প্রসঙ্গে আমাকে বলেছিলেন, অমুকের ছেলে হেঁটে হেঁটে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে, আরামে থাকো, কিছু টের তো পাওনা! আমি তখন সেটি অনুধাবন করতে একদিন হেঁটে হেঁটে বাড়ি আসি, আসতে আমার ১ ঘন্টারও বেশি সময় লেগেছে এবং আমি রাস্তার পাশে থাকা দোকান থেকে সফট ড্রিংকস ও চিপস কিনে খেয়েছিলাম। আমি চরম উচ্চবিত্ত কারো সন্তান নাহলেও স্বচ্ছল পরিবারে আমার জন্ম হয়েছে। আমার বাবার আর্থিক উত্থান, পতন আমিও উপলব্ধি করেছি একটা সময়! তাতে আর যাই হোক গরীবী শেখা হয়ে যায় নাই! প্রসঙ্গে ফিরে যাই, অবস্থা তৈরি না হলে, জোর করে আসলে গরীবি শেখানো যায় না!

একইভাবে আপনাদের আরও এক জনপ্রিয় লেখা আপনার সন্তানকে আভিজাত্য শেখান, সেটাও আসলে জোর করে হয় না! আভিজাত্যের সংজ্ঞায়ন এখানেও জরুরি হয়ে যায়! যার কিছুই নাই সে কোন আভিজাত্য শেখাবে, কোত্থেকে শেখাবে, যাদু দিয়ে শিখবে? আবার অর্থ থাকলেই অভিজাত সম্প্রদায়ের অংশ হওয়া যায় না, এটার জন্য খুব ভেতরকার রুচিবোধের সংস্পর্শ লাগে, সাথে জরুরি আরও কিছু অর্থবহ প্রভাবক! কে, কার সন্তানকে কি শেখাবে সেসব না বলে বরং বলুন, সন্তানকে পরিবেশ, পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা শেখানোর কথা! আরও বলুন একজন ভাল মানুষ হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করতে, বলে ক্ষান্ত হওয়া যাবে না, তাঁদের সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করার কথা বলুন। পরিশুদ্ধ তো কেউ নয়, তাই নিজেরা ভাল কিছু করে সন্তানের সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করুন। এটাই জরুরি! 

শ্রদ্ধেয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ একটি উক্তি করেছিলেন, পৃথিবীতে খারাপ মানুষ থাকতে পারে কিন্তু একটাও খারাপ বাবা নেই। তিনি একটা বিশেষ মুহূর্তের প্রেক্ষিতে এটি বলেছিলেন। এটাকে চূড়ান্ত সত্য ভাবারও কোনো কারণ আসলে নেই, দুনিয়ায় অজস্র অ* মানুষ বাবাও আছে! 

এখন আবার নতুন একটা লেখা চালু করেছেন তাও বেশ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে, এই যেমন বৃদ্ধাশ্রমে দেখবেন পুলিশ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের পিতামাতা রয়েছে কিন্তু একজন দিনমজুরের পিতা মাতা দেখাতে পারবেন না, আবেগে ভেসে যাওয়া জনতার একটা বিরাট অংশ জানেই না যে, ওই শ্রেণিতে পিতামাতার উপর হাজারো নির্যাতনের অজস্র ঘটনা রয়েছে। কাজেই মহান বানাতে হলে যৌক্তিক বিষয়কে বানান। আবেগের ব্যবসা বন্ধ করে, বিবেকের দ্বার খুলুন। একজন ডাক্তারের পিতা মাতা বৃদ্ধাশ্রমে আছে বলে সকল চিকিৎসকগণই তাঁর পিতামাতার সাথে এমনটি করেন এটি ভাববার কোনো কারণ নেই।

দুদিন পর এসব আবোল তাবোল উপস্থাপন না করে সন্তানের জন্য এমন কিছু উপস্থাপন করুন যা থেকে তাঁরা সত্যিই সাদরে কিছু গ্রহণ করতে পারে!

লেখক : এডিসি, ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ফোর্স ডিভিশন।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর