১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ১২:৩৯

ঐতিহ্যের ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট):

ঐতিহ্যের ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

সিলেটের বিশ্বনাথে এবারও হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ-উৎসবে উদযাপিত হল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া’ উৎসব। শিকড়ের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের টানে প্রতি বছরই আয়োজন করা হয় এই উৎসবের।

বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলার গোয়াহরী গ্রামের বড় বিলে এই মৎস্য আহরণ শুরু হয়। এতে প্রায় চার শতাধিক সৌখিন মৎস্য শিকারী অংশগ্রহণ করেন। 

সরেজমিন বিলে গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীত উপেক্ষা করে সাতসকালেই বিলের ধারে জড়ো হয়েছেন শিকারীরা। এতে দলভুক্ত হয়েছে শিশু-কিশোরও। মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম পাশে নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত সময়ের প্রহর গুনছেন সকলেই। সময় হলেই একযোগে ‘আনন্দ চিৎকার’ দিয়ে বিলে নামার অপেক্ষায় সবাই। এ দিকে এই উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে বিলের ধারে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। সকাল ১১টা হলেই দৌড়ে পলো নিয়ে বিলে ঝাপ দেন শিকারীর দল। দীর্ঘসময় হিম-শীতল জলে মাছ শিকারে মেতে উঠেন তারা।

এসময় ধরা পড়ে বোয়াল, রুই, কাতলা, শোল, গজার ও বাউশ মাছ। এছাড়াও জাল দিয়ে ঘোলা জলে উপরে ভেসে ওঠা প্রচুর টেংরা-পুঁটিও ধরা হয়।

গ্রামবাসী জানান, গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তনুযায়ী ভাদ্র মাস থেকে বিলে সকল প্রকার মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এতে বিলে জড়ো হয় বিভিন্ন জাতের প্রচুর মাছ। এই পাঁচ মাসে মাছগুলো সুযোগ পায় বড়ো হওয়ার। ‘পলো উৎসব’র এক সপ্তাহ পূর্বে পঞ্চায়েতের সভা ডেকে সৃংঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া হয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সভার পরপরই উৎসবের ন্যায় গ্রামের ঘরে ঘরে পলো তৈরি, মেরামত ও সংগ্রহের কাজ চলে। 

এরপর মাঘ মাসের পহেলা দিনেই আনুষ্ঠানিকভাবে একযোগে মাছ ধরতে বিলে নামের এবং অধিকাংশ শিকারীই মাছ হাতে বাড়ি ফেরেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, আমাদের উপজেলায় এটিই সবচে' বড় ‘পলো বাওয়া উৎসব’। যুগযুগ ধরে এ ঐতিহ্য চলমান। আমরা গ্রামবাসীরা মিলেমিশে প্রতিবছর এ বিল থেকে উৎসবের মতো দেশীয় প্রজাতির সু-স্বাদু মাছ আহরণ করে থাকি।   

 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর