১৯ জুন, ২০২১ ১৮:২৩

রপ্তানি হচ্ছে নওগাঁর আম্রপালি

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ:

রপ্তানি হচ্ছে নওগাঁর আম্রপালি

আমের জেলা নওগাঁ। জেলার সাপাহারের সফল উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী সোহেল রানার আম্রপালি আম ইংল্যান্ডে রপ্তানি করা হয়েছে। গত ১৭ জুন প্রায় ১ টন আম্রপালি গেছে ইংল্যান্ডে।

জানা যায়, জেলার বরেন্দ্র এলাকার সাপাহার, পোরশা ও নিয়ামতপুর ও পত্নীতলার আংশিক এলাকা আম্রপালির জন্য বিখ্যাত। এ জাতের আমগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হয়। উপজেলার ‘বরেন্দ্র এ্যাগ্রো পার্ক’ এর মালিক সোহেল রানা তার নিজস্ব বাগান থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিদেশে আমগুলো রপ্তানি করেন। 

নওগাঁর পত্নীতলার দিবর ইউনিয়নের রূপগ্রাম গ্রামের কৃষক আজিজার রহমানের ছেলে সোহেল রানা। তিনি নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের ছেলে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। ২০১৫ সালে নিজ গ্রামের খাড়িপাড়া এলাকায় পৈতৃক ১২ বিঘা জমির উপর গড়ে তোলেন সমন্বিত কৃষি খামার। নাম দেন ‘রূপগ্রাম এ্যাগ্রো ফার্ম’। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মেধা ও পরিশ্রমে তিনি এখন ১৪০ বিঘা জমিতে পৃথক দুটি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। তার এ খামার এখন এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। সাপাহার গোডাউন পাড়ায় আড়াই বছর বয়সী প্রায় দেড় হাজার আম্রপালি গাছ রয়েছে। এ বাগান থেকে এ বছর প্রায় ৪০ টনের মতো আম পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। গাছের বয়স কম হওয়ায় আমগুলো জলদি পাকবে। কারণ গাছের বয়স বেশি হলে আম পাকতে দেরি হয়।

সফল উদ্যোক্তা সোহেল রানা জানান, বিদেশে আম রপ্তানির জন্য আমগুলোর বিশেষ পরিচর্যা করা হয়েছে। চাষের সময় সুষম ও জৈব সার, নিয়মিত কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশকের ব্যবহার নিশ্চিত করেছেন। যাতে আমগুলো রোগবালাই মুক্ত থাকে। তবে আম পাড়ার ১৫ দিন আগে গাছে সব ধরনের স্প্রে বন্ধ করতে হয়। এতে কীটনাশকের কেমিক্যাল মানুষের শরীরে আর কোনো ক্ষতি করতে পারে না। সাধারণ চাষিরা কয়েকদিন আগে কীটনাশক স্প্রে করে বাজারে নিয়ে যান আম। কিন্তু বিদেশে যেসব আম রপ্তানি করা হবে সেগুলো ঢাকায় যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর সব ঠিক থাকলে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। 

তিনি আরো বলেন, বরেন্দ্র এগ্রো বাগানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইন্সটিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ শরফ উদ্দিনের তত্ত্বাবধায়নে গ্লোবাল গ্যাপ পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম্রপালি আম চাষ করা হয়। এ বছর প্রায় ১০ টন আম রফতানি করার ইচ্ছা আছে। আগামী সপ্তাহে আরও এক টন বরাদ্দ আসতে পারে। রফতানিকারকের কাছে প্রায় চার হাজার টাকা মন দরে আম বিক্রি করেছি। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ আমই বেশ সুস্বাদু। আমরা জানতাম না কীভাবে আম বিদেশে রফতানি করার উপযোগী করতে হয়। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়ার মাধ্যমে তা জানতে পেরেছি। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমের জন্য অর্ডার পাচ্ছি। আমার দেখাদেখি অনেকেই আম ব্যবসায় উৎসাহিত হবে। স্থানীয় বাজারে দাম কম পেলেও দেশের বাইরে ভালো দাম পাওয়া যাবে আমের। এতে আমরা লাভবান হবো।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর