১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:৪১

অতিথি পাখির কলরবে মুখর মানিকগঞ্জের নিলুয়া বিল

মোঃ কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

অতিথি পাখির কলরবে মুখর মানিকগঞ্জের নিলুয়া বিল

নিলুয়া বিলের অতিথি পাখি

এবারও ভুল হয়নি, প্রতি বছরের মতো মনে করে তারা ঠিকই এসেছে মানিকগঞ্জের নিলুয়া বিলে। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে বিলের চারপাশ। আর শীতের এই অতিথিদের স্বাগত জানাতে স্থানীয় মানুষেরাও মোটেও কার্পণ্য করছে না। প্রতিদিন সুদূর শীত রাজ্য থেকে নিলুয়া বিলে আসা অতিথি পাখিদের দেখতে ভিড় করছে পাখিপ্রেমী মানুষেরা।

বিলটি জেলার দুই উপজেলা ঘিওর এবং দৌলতপুর সংলগ্ন। শীত আসলেই বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথি পাখিরা নিলুয়া বিলে অস্থায়ী আবাস গাড়ে। কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত হয় পুরো এলাকা। বিলটি আকারে খুব বড় না হলেও পাখির কারণে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। পাখিদের চঞ্চলতায় দর্শনার্থীদেরও চোখ জুড়ায়, মন ভরে। তাই একটু প্রশান্তির খোঁজে তারাও ছুটে আসেন নিলুয়া বিলের লিলুয়া বাতাসে। কেউ কেউ দূর দেশের পাখিদের মায়ায় পড়ে বিলের পাশেই কাটিয়ে দেন অনেক ক্ষণ। মনের অজান্তেই ঘড়ির কাঁটায় সন্ধ্যা নামে। পাখিদের কলতান শূন্যে মিলিয়ে যায় দিগন্ত রেখা আবির মায়ায় হারালে, পাখি প্রেমীরাও নীড়ের পথ ধরেন। 

নিলুয়া বিলে গিয়ে দেখা যায়, শান্ত জলের বুকে কচুরিপানার সবুজ গালিচার মাঝে ঝাঁক বেঁধে ডানা মেলছে অতিথি পাখির দল। উড়ে চলা পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত চারপাশ। এবার আসা পাখি দলে আছে, সরালি, পিয়াংহাঁস, পাতি সরালি, রাজসরালি, গ্যাডওয়াল, লেঞ্জা হাঁস, বালিহাঁস। এছাড়াও বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখিও আছে এখানে। স্থানীয়রা জানান, দেশি জাতের শামুকখোল, পানকৌড়ি, ছন্নিহাঁসও এই বিলে অতিথি পাখিদের সাথে মিলেমিশে থাকছে।

পরিবাররে সদস্যদের নিয়ে পাখি দেখতে আসা স্বপন সাহা  বলেন, ‘দলবেঁধে যখন পাখিগুলো আকাশে ওড়ে দেখে মন হারিয়ে যাই। কেমন লাগে বলে বোঝানো যাবে না।’ রেবেকা পারভিন নামে একজন সরকারী চাকুরিজীবি জানালেন, অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে এখানে
পাখি দেখেই তিনি সন্ধ্যা পর্যন্ত কাটিয়ে দেন।

স্থানীয়দের দাবি, আগে অনেক বেশি পাখি আসতো। অবৈধ ভাবে পাখি শিকারের ফলে ভয়ে এখন পাখি আসা কমে গেছে। যদিও এখন, স্থানীয়দের প্রতিবাদের ‍মুখে পাখি শিকারিরা গাঢাকা দিয়েছে। শিকারের সংখ্যাও তাই কমেছে। এবার পাখি আসাতেও দেরি হয়েছে অনেকটা। দর্শনার্থীরা বলছেন, সরকারিভাবে বিলটি সংরক্ষণ করা গেলে সামনের বছরগুলোতে পাখি আসার হার আরও বাড়বে। সাথে পাখি কেন্দ্রিক পর্যটনে স্থানীয়রাও কিছুটা লাভবান হবেন। 
  

ঘিওর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসাইন বলেন, ‘পাখি প্রকৃতির অলঙ্কার। এ অলঙ্কার ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণ ক্ষেত্র  রক্ষা করতে হবে। অতিথি পাখিরা যেন মুক্ত আকাশে, খালে, বিলে, হাওড় বাঁওড়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে তার ব্যবস্থা অবশ্যই আমাদের করতে হবে।’

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর