শিরোনাম
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০৮:৩৭
প্রকৃতি

অতিথি পাখিতে মুখর নিলুয়া বিল

মো. কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

অতিথি পাখিতে মুখর নিলুয়া বিল

প্রতি বছরের মতো এবারও মানিকগঞ্জের নিলুয়া বিলে অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। পাখি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে পাখিপ্রেমীরা দল বেঁধে আসছেন এখানে। বিলটি জেলার দুই উপজেলা ঘিওর এবং দৌলতপুর-সংলগ্ন। শীত আসলেই বিভিন্ন দেশ থেকে উড়ে এসে অতিথি পাখিরা এই নিলুয়া বিলে আশ্রয় নেয়। পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। বিলটি আকারে খুব বড় না হলেও পাখির কারণে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। পাখির বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ও উড়ে চলা নীরবে বসে থাকা মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এক নজর পাখি দেখার জন্য এখানে ছুটে আসেন। দীর্ঘ সময় তারা অপেক্ষা করেন পাখির মায়ায়। হারিয়ে যান পাখি প্রেমে। বসে থাকতে থাকতে মনের অজান্তে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এ সময় পাখিরা নীরব হয়ে গেলে দর্শনার্থীরা বাড়ি ফেরেন। সরেজমিন দেখা যায়, শান্ত জলের বুকে কচুরিপানার সবুজ গালিচার মাঝে ঝাঁক বেঁধে ডানা মেলছে অতিথি পাখির দল। উড়ে চলা পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত চারপাশ। মানিকগঞ্জের এই নিলুয়া বিল প্রতিবছর শীত মৌসুমে হয়ে ওঠে যেন পাখির আবাসস্থল। এবারও এ বিলে আবাস বেঁধেছে বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখিসহ অতিথি পাখি। স্থানীয়রা জানান, সরালি, পিয়াংহাঁস, পাতি সরালি, রাজসরালি, গ্যাডওয়াল, লেঙজা হাঁস, বালিহাঁস, পাতিকূট, দেশি জাতের শামুকখোল, পানকৌড়ি, ছন্নিহাঁসসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি এই বিলে আসে। পরিবার নিয়ে পাখি দেখতে আসা স্বপন সাহা বলেন, দল বেঁধে যখন পাখিগুলো আকাশে ওড়ে, তা দেখে মন হারিয়ে যায়। কেমন লাগে তা বলে বোঝানো যাবে না। রেবেকা পারভিন নামে একজন সরকারি চাকুরে জানান, অফিস করে বাড়ি ফেরার পথে এখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে পাখির কর্মকান্ড দেখি। এ ছাড়া সব বয়সের লোকজন বিকাল হলে বিলের পাড়ে জড়ো হয় পাখি দেখার জন্য। স্থানীয়রা জানান, আগে অনেক বেশি পাখির আনাগোনা হতো। অবৈধভাবে পাখি শিকারের ফলে ভয়ে পাখি আসা কমেছে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করায় শিকারিরা গাঢাকা দিয়েছে।

এবার পাখি অনেক দেরিতে এসেছে। দর্শনার্থীদের দাবি সরকারিভাবে এই বিলটিকে দেখভাল করার জন্য। অতিথি পাখির জন্য এলাকাটির পরিচিতি বেড়েছে। সেই সঙ্গে শীতকালে এখানে ভালো ব্যবসাও হয়। ঘিওর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. ফারুক হোসাইন বলেন, পাখি প্রকৃতির অলংকার। এ অলংকার ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণক্ষেত্র রক্ষা করতে হবে। অতিথি পাখিরা যেন ‘মুক্ত আকাশে, খালে, বিলে, হাওর-বাওড়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে তার ব্যবস্থা অবশ্যই আমাদের করতে হবে।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর