রংপুরের পীরগঞ্জে প্রত্যন্ত গ্রামে অর্ধশত কৃষক ওষুধি তুলসী গাছে স্বপ্ন বুনছেন। উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় তুলসীর চাষ হচ্ছে। তুলসী ছাড়াও বাসকসহ কয়েক প্রকারের ওষুধি গাছের চাষ করে ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছেন ওই এলাকার কৃষকরা।
জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামের কৃষক মেহেদুল ইসলাম জানান, ওষুধি বাগান থেকে এবছরে তার তুলসী পাতা ১০ টন, বাসক ৮ টন, কালমেঘ ২ টন ও অশ্বগন্ধা ৩ টন উৎপাদন হতে পারে। বিক্রির ৩ ভাগের এক ভাগ উৎপাদন ব্যয় হয়। উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়ে প্রতি বছর ১৫ লাখ টাকা আয় হয়। ওষুধ কোম্পানিতে ২০১৬ সাল থেকে পাতা বিক্রি করে আসছেন তিনি।
তিনি বলেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৫ বছর থেকে ওষুধি গাছ তার ভাগ্য বদল করে দিয়েছে। তিনি বলেন, পাঁচগাছি এলাকায় ৫০ জনেরও বেশি কৃষক ওষুধি গাছের চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। সরকারি-বেসরকারি ভাবে সহায়তা পেলে তুলসীসহ অন্যান্য ওষুধি গাছের আবাদ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, চাষিদের চারা ও বীজ দেওয়ার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ওষুধি গাছের চাষ কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারলে একদিকে যেমন কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে, অপরদিকে ওষুধ শিল্পের চাহিদাও পূরণ হবে।
কৃষিবিদ আবিদ করিম বলেন, তুলসী একটি ওষুধিগাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। তুলসী গাছ লামিয়াসি পরিবারের অন্তর্গত একটি সুগন্ধি উদ্ভিদ। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি পবিত্র উদ্ভিদ হিসেবে সমাদৃত হয়ে আসছে। প্রাচীনকাল থেকে সর্দি, কাশি, ঠাণ্ডা লাগা ইত্যাদি নানা সমস্যায় তুলসী ব্যবহার হয়ে আসছে। ওষুধ হিসেবে এই গাছের রস, পাতা এবং বীজ ব্যবহার হয়ে থাকে। ৪ প্রকারের তুলসী গাছ রয়েছে। এগুলো হল বাবুই তুলসী, রাম তুলসী, কৃষ্ণ-তুলসী ও শ্বেত তুলসী।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর