১২ এপ্রিল, ২০২৩ ১৪:৫০

প্রাণ ফিরেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেশম পল্লীতে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রাণ ফিরেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেশম পল্লীতে

ঈদকে ঘিরে প্রাণ ফিরে পেয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের লাহারপুর, শিবগঞ্জের হরিনগর ও কানসাটের বিশ্বনাথপুরের অসংখ্য রেশম পল্লী। তাঁতের খটখট শব্দে কর্মচাঞ্চল্য হয়ে উঠেছে রেশম তাঁত পল্লীগুলো। তাঁতের কারিগরদের পরিশ্রমে নিপূণ হাতে তৈরী হচ্ছে বাহারি রেশম কাপড়। 

তাঁত মালিকরা জানান, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজারজাত করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তাদের মতে, রং ও সূতার বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে আবার ঘুরে দাঁড়াবে এ জেলার  ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প। হরিনগর তাঁতিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, আসন্ন ঈদ উল ফিতর এবং ঈদুল আযহা ও পূজা পার্বণে রেশম তাঁতপল্লীতে কাজের চাপ বেড়ে যায়। আর ঈদকে সামনে রেখে হরিনগর রেশম তাঁত পল্লীগুলো এখন তাঁতের খুটখাট শব্দ আর কারিগর-শ্রমিকদের ব্যস্ততায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। আর রেশম শাড়ির বুননে বৈচিত্র আর নতুনত্বের ছোঁয়া দিতে দিনরাত কাজ করছেন তাঁতিরা। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এখন চাহিদা অনেক বেশি, তাই নানা ধাপে এখানে রাত-দিন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁত শ্রমিকরা। তাদের তৈরী রেশম সিল্কের পোশাক ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকার আড়ং, অভিজাত বিপনীবিতান, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি চাহিদা রয়েছে বিদেশেও। 

এখানকার রেশম সিল্কের তৈরি শাড়ি, পাঞ্জাবির কাপড়, বেনারশী, গরদের কাপড়, মটকা, ওড়না, সালোয়ার কামিজ মূলত মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের পোশাকের চাহিদা মেটায়। ফজর আলী ও ফুটু আলী নামে দুই তাঁত শ্রমিক জানান, তারা দীর্ঘ ২০/২২ বছর এ পেশার সাথে জড়িত। তাদের কাজের উপর নির্ভর করে মজুরি। তারা সকাল ৮টা থেকে দুুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করার পর আবার বিকেল থেকে কাজ  শুরু করেন। 

আরেক তাঁত শ্রমিক আজিজুল হক জানান, জিনিষপত্রের দাম বাড়লেও তাদের মজুরি খুব একটা তেমন বাড়েনি। ১ গজ কাপড় বুনলে ৮৫ টাকা এবং সব মিলিয়ে ৪/৫ গজ কাপড় বুনলে সর্বমোট ৪০০ থেকে ৪২৫ টাকা পাওয়া যায়। তবে এখন সারাবছরই কমবেশি কাজ হয়ে থাকে, খুব একটা বসে থাকতে হয় না। 

তাঁত মালিক ছবি লাল দাস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,  বর্তমানে রং, সুতাসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য বাড়লেও কাপড়ের দাম সেভাবে বাড়েনি। এজন্য আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারা যাচ্ছে না। তারপরও বংশ পরম্পরায় এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এ শিল্পের প্রতি সরকারের নজর আরো বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ দেশের আর্থিক খাতের জোগানদাতা বস্ত্র খাতে ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকলে তাঁত শিল্পকে আরও গতিশীল করা সম্ভব। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর