‘একটি সৃজনশীল পছন্দ একটি অনন্য রুচির পরিচায়ক’ ট্যাগলাইনকে সামনে রেখে বাঁশের বিভিন্ন নান্দনিক ডিজাইনের পণ্য তৈরি করে তাক লাগিয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা হিরণ আহমেদ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে হিরণের এসব পণ্য যাচ্ছে বিদেশেও।
বাঁশ থেকে তৈরি এসব পণ্য বিক্রি করে এঈ তরুণ উদ্যোক্তা মাসে আয় করছেন লাখ টাকা। তার উদ্যোগের ফলে হোটেল, রিসোর্টসহ বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে ঘর সাজাতে শৌখিন মানুষের মধ্যে হস্তশিল্পের কদর বেড়েছে দ্বিগুণ।
জানা গেছে, পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রামের পাশে রাঙামাটি বাজারে ২০০৮ সাল থেকে স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন হিরণ আহমেদ। ২০১৪ সালে স্টুডিওটি নান্দনিক ডিজাইনে সাজানোর প্রয়োজন মনে করেন তিনি। সে সময় বাঁশের নকশার কারুকার্য দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয় স্টুডিওটি। পরে ২০১৯ সালে বাঁশ কাটার যন্ত্রাংশ কিনে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন বাঁশ থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরির কাজ।প্রতিষ্ঠানের নাম দেন ‘বাঁশবিলাস’। এক পর্যায়ে দেশের বাইরের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ইউটিউব থেকে সহযোগিতা নেন তিনি। এরপর তিনি বাঁশ থেকে ল্যাম্প, শো-পিস, পানির বোতল, ফুলদানি-কলমদানি, মগ, জগ ও ট্রেসহ প্রায় শতাধিক পণ্য তৈরি করেন। তিনি প্রয়োজনীয় বাঁশ স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করেন।
হিরণ আহমেদের ভাষ্য, ঘুণ পোকা ধরা থেকে রক্ষা পেতে ও টেকসই করতে বাঁশে তিন ধাপে রাসায়নিক উপকরণ দিয়ে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরে এসব বাঁশ আকারভেদে কেটে প্রয়োজনীয় পণ্য তৈরি করেন। বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, বরিশাল, সিলেট, নোয়াখালী, খুলনা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তার উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ করেন। শুধু তাই নয়, অনলাইনের সহায়তায় বিদেশেও পাঠাচ্ছেন তৈরি পণ্য। পণ্যগুলো প্রকারভেদে ১০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।
হিরণ আহমেদ বলেন, আমার তৈরি পণ্য অনলাইনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ‘বাঁশবিলাস’ নামে ফেসবুক পেজ রয়েছে। প্রতি মাসে এ কারখানা থেকে লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করে থাকি। প্রতিদিন আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই কাজ দেখতে ও পণ্য কিনতে আসছেন। তিনি জানান, ভবিষ্যতে এ শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার।
দেখা গেছে, রাঙামাটির মাটির ঘরটির টেবিলে থরে থরে সাজানো রয়েছে হরেক রকমের বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ল্যাম্প, শো-পিস, পানির বোতল, মগ, জগ, ডেস্ক কলমদানিসহ বহু কিছু।
কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, হিরণের কারখানায় পাঁচজন কাজ করেন। এখানে প্রতিদিন মজুরি ৫০০-৬০০ টাকা পাই। এ কাজ করে সংসারে জীবিকা চলে।
নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরী উপ-ব্যবস্থাপক শামীম আক্তার বলেন, হিরণ সফল। জেলায় তিনি বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তাই ক্ষুদ্র ও ও কুটির শিল্পের আওতায় বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণসহ স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ