২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৬:২৩

বট-পাকুড়ের গাছে গাছে বাদুড়ের নিরাপদ আবাস

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

বট-পাকুড়ের গাছে গাছে বাদুড়ের নিরাপদ আবাস

বট-পাকুড়ের গাছে গাছে বাদুড়ের নিরাপদ আবাস

গাছের নিচ দিয়ে চলাচলের সময় কিচিরমিচির শব্দই জানান দেয় এসব গাছে বাদুড়ের নিরাপদ আবাস। প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো বট-পাকুড়ের গাছে যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার বাদুড়ের বসবাস। বট-পাকুড় গাছের ডালে ডালে, গাছের পাতার সাথে মিশে আছে এসব বাদুড়। যেন এটা তাদের বসবাসের অভয়ারণ্য।

এ অবস্থা দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউপি গোন্দলগ্রামের ঠাকুরবাড়ির বট-পাকুড়ের গাছে গাছে। স্থানীয়রা এরই মধ্যে দেড়শ বছরের বট-পাকুড়ের গাছের বিয়েও দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, চিরিরবন্দরের তেঁতুলিয়া ইউপির গোন্দলগ্রামের ঠাকুরবাড়ির পুকুর পাড়ে বিশাল আকৃতির দেড়শ বছরের পুরনো বট-পাকুড়সহ আশপাশের গাছে হাজার হাজার বাদুড়ের বসবাস। যেন এটা তাদের বসবাসের অভয়ারণ্য। গাছের ডালে ডালে, পাতায় পাতায় সর্বত্র বাদুড়ের নিরাপদ আবাস। এখানে সকালে কিংবা বিকেল-সন্ধ্যায় দেখা যাবে হাজার হাজার বাদুড়। এই চিত্র প্রতিদিনের।

বাদুড় রাতের আঁধারে চলে। তাই খাবারের সন্ধানে সন্ধ্যা হলেই এসব বাদুড় চলে যায় বিভিন্ন দূর-দূরান্তের এলাকায়। কিন্তু সকাল হওয়ার আগেই আবার ফিরে আসে এসব বাদুড়। দিনের বেলায় এই এলাকার গাছের ছায়ায় উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। দিনের বেলায় মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণীই জেগে থাকে। দিবাচর প্রাণীদের কোলাহলে বাদুড়ের পথচলার সেই বিশেষ শব্দ তরঙ্গ হারিয়ে যায়। তাই কোটি কোটি শব্দ তরঙ্গের ভিড়ে নিজের শব্দ তরঙ্গটি খুঁজে খুঁজে পায় না বলেই বাদুড় দিনের বেলা বাসা ছেড়ে বের হয় না।

তবে বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক তারে মাঝে মাঝে মরা বাদুড় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়, কারণ তারের প্রস্থ কম হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তারা তারের সুস্পষ্ট ধারণা পায় না। বাদুড়ের বড় বড় দুটি চোখ থাকলেও সেগুলো দিয়ে তারা দেখতে পায় না। বাদুড়কে তাই দেখার কাজটা করতে হয় কান দিয়েই। আজব প্রাণীদের মধ্যে বাদুড় একটা। ডানা আছে আকাশে উড়তেও পারে, তবু সে পাখি নয়, স্তন্যপায়ী প্রাণী! মুখটা শিয়ালের মতো, খরগোশের মতো বড় বড় দুটো কান, ছাতার মতো অদ্ভুত দুটি পাখা।

বাদুড় মূলত ফলভোজি। পেয়ারা, লিচু ও জামরল ইত্যাদি ফলের ঠিকানা খুঁজে বের করতে তারা শব্দ তরঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে নাকের গন্ধ শক্তির ওপরও নির্ভর করে।

ওই গাছের মালিক ফনি ঝাঁ জানান, বাপ-দাদার আমল থেকেই এগাছে বাদুড়গুলো আছে। এ গাছ দুটো তাদের বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে অবস্থিত। তিনি জন্মের পর থেকেই দেখে আসছেন। এলাকার মানুষ প্রকৃতির এই বাদুড়ের উপর বিরক্ত হয় না। বেশিরভাগ এরা দিনে গাছে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। রাতে তারা বের হয় খাবারের সন্ধানে। মানুষও এদের ক্ষতি করেন না। এ কারণে নিরাপদ আবাস মনে করে এসব বাদুড়। এগাছ দুটোর বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওইসব গাছের নিচ দিয়ে চলাচলের সময় অনেকেই তাদের কিচিরমিচির শব্দ শুনতে পারবেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর