১৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০৮:৫২

হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির শিল্প

নজরুল মৃধা, রংপুর

হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির শিল্প

ফাইল ছবি

হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির ‘তাঁতশিল্প’। এক সময় গ্রাম-গঞ্জে উঁচু গাছের ডালে সুনিপুণভাবে বাবুই পাখি বাসা তৈরি করত। পথিক মুগ্ধ চোখে তাঁতিদের মতো সুনিপুণ শিল্পকর্মে গড়া এ পাখির বাসার দিকে চেয়ে থাকত। এ পাখিকে ভালোবেসে অনেকে নিজের প্রতিষ্ঠানেরও নামও রেখেছেন। পাখিটি বর্তমানে বিপন্নের তালিকায়। 

জানা গেছে, খুব সুন্দর বাসা বোনে বলে এই পাখিকে অনেকে আদর করে তাঁতিপাখি বলে ডাকেন। এদের বাসা বানানোর গঠন কৌশল বেশ জটিল আর খুব সুন্দর। বাবুই একাধিক কক্ষবিশিষ্ট বাসা তৈরি করতে পারদর্শী। বাবুই পাখির বাসা উল্টানো কলসির মতো দেখতে। বাসা বানানোর জন্য বাবুই খুব পরিশ্রম করে। ঠোঁট দিয়ে ঘাসের আস্তরণ সরিয়ে যত্ন করে পেট দিয়ে ঘষে গোল অবয়ব মসৃণ করে। বাসা তৈরির শুরুতে দুটি নিম্নমুখী গর্ত থাকে। পরে একদিক বন্ধ রাখে ডিম রাখার জন্য। অন্য দিকটি লম্বা করে যাওয়া আসার জন্য।  বাবুই বাসা করার জন্য নলখাগড়া ও হোগলার বনকে বেশি পছন্দ করে। কিন্তু দেশে নল ও হোগলার বন কমে যাওয়ায় আবাসস্থল সংকটের কারণে বাবুই পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। 

এরা মূলত বীজভোজী পাখি। এ কারণে তাদের ঠোঁটের আকৃতি বীজ ভক্ষণের উপযোগী এবং চোঙাকার আর গোড়ায় মোটা। অধিকাংশ বাবুই প্রজাতির আবাস আফ্রিকায়। তবে এশিয়া মহাদেশেও এদের বিচরণ রয়েছে। এরা দলবদ্ধভাবে বসবাস করতে পছন্দ করে। বেশির ভাগ  পুরুষ বাবুই বেশ উজ্জ্বল রঙের হয়। কিছু প্রজাতি তাদের প্রজনন মৌসুমে বর্ণের  ভিন্নতা প্রদর্শন করে। বাংলাদেশে তিন ধরনের বাবুই দেখা যায়। দেশি বাবুই, দাগি বাবুই ও বাংলা বাবুই। গ্রীষ্মকাল এদের প্রজনন ঋতু। 

প্রকৃতি বিষয়ক লেখক রংপুরের বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রের ইনচার্জ কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না বলেন, বাংলাদেশে বাংলা ও দাগি বাবুইয়ের প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। তবে দেশি বাবুই এখনো দেশের সব গ্রামের তাল, নারিকেল, খেজুর, রেইনট্রি গাছে দলবেঁধে বাসা বোনে। কাটা জাতীয় গাছে বাসা তৈরি করে যাতে খাবার সংগ্রহ করতে সুবিধা হয়। এরা সাধারণত মানুষের কাছাকাছি বসবাস করে। ফলে অনেকে মানুষ এদের বাসা ভেঙে ফেলে। এভাবে আবাসস্থল হারানোর পাশাপশি পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর