৪ নভেম্বর, ২০২৩ ২১:২২

পাল্টে যাচ্ছে চরের মানুষের জীবনযাত্রা

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

পাল্টে যাচ্ছে চরের মানুষের জীবনযাত্রা

বন্যা ও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে প্রতিবছর অসংখ্য পরিবার গৃহহীন হয় কুড়িগ্রাম জেলায়। বিনষ্ট হয় নদনদীর চরের মানুষের আবাদকৃত বিভিন্ন কৃষি ফসল। ফলে কৃষিনির্ভর চরের এসব পরিবারের সদস্যরা পড়ে যান চরম সংকটে। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার ৭২০টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ বাংলাদেশ। 

তারা দুর্যোগকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার পাশাপাশি পারিবারিকভাবে আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ডে এগিয়ে এসেছে। আর এ সংস্থাটির সহযোগিতা পেয়ে চরের ওই পরিবারগুলো ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন সফলতার মুখ দেখছে। সেই সঙ্গে পাল্টে গেছে তাদের জীবনমান। 

কুড়িগ্রাম ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ ছোট বড় ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত জেলা। আর এসব নদীর বুকে জুড়ে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চর। প্রতি বছর বন্যা ও নদী ভাঙনের ফলে নিঃস্ব হয় এসব চরের অনেক পরিবার। এই পরিবারগুলোর মধ্য থেকে জেলার চিলমারী, রৌমারী ও সদর উপজেলায় ২৪টি চরের ৭২০টি দরিদ্র পরিবারকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে উন্নয়নমুখী হতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ।

তারা তাদের প্রশিক্ষণসহ শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে শাকসবজির বীজ বিতরণ ও ভেড়া বিতরণ করেছে। এছাড়াও সংস্থাটি বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়েও যাতে সবজি উৎপাদন অব্যাহত থাকে সেজন্য কমিউনিটি ভিত্তিক সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করে আসছে। বস্তায় আদা চাষে উৎসাহিত করায় গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। সবজি উৎপাদনে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ভার্মি কম্পোষ্ট উৎপাদন এবং ব্যবহারে সহায়তা প্রদান করছে। পরিবারগুলোর বন্ধন অটুট রাখার জন্য পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ ও আইনগত বিষয় নিয়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়। 

সরেজমিনে সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ধরলা নদীর অববাহিকায় কায়েম বড়াইবাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এ গ্রামের ৩০টি বন্যা কবলিত পরিবার পারিবারিক আয়বৃদ্ধিমুলক কর্মকাণ্ড ছাড়াও সামাজিক উন্নয়নমুলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন। 

ফ্রেন্ডশিপ এর ট্রান্সজিশনাল ফান্ড (এএসডি) প্রজেক্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার কৃষিবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জানান, আমাদের ফ্রেন্ডশিপ লুক্সেমবার্গ এর সহায়তায় সদস্যদের আয় রোজগার নিয়মিতকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুশাসন এবং স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নে কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী এবং রৌমারী উপজেলার মোট ২৪টি চরে ৭২০ জন সদস্যকে এ প্রকল্প সহায়তা প্রদান করে আসছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, এ প্রকল্পের পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক উপকারভোগীদের পূর্বের ন্যায় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। .

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী এবং রৌমারী উপজেলায় ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্পের মাধ্যমে ৭২০টি পরিবারকে ভেড়া প্রদান করেছে এবং প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ফলে পরিবারগুলোর ভেড়া পালনের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর