২০ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:১৭
ইট তৈরি থেকে পোড়ানো সবই করছে শিশুরা

ভাটায় হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব

ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করলেও নীরব ভূমিকায় প্রশাসন

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

ভাটায় হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব

ফাইল ছবি

মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন ইটভাটায় অল্প টাকায় বেশি কাজ করানোর লোভে শিশুদের ব্যবহার করছেন মালিকরা। বই-খাতা হাতে যখন শিশুদের বিদ্যালয়ে থাকার কথা তখন তাদের দিন কাটছে ভাটায় কাজ করে। আর্থিক অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে অনেক মা-বাবা সন্তানকে পাঠান কাজে। দেশে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ থাকলেও বাঁচার তাগিদে জীবনযুদ্ধে জড়াচ্ছে তারা। প্রকাশ্যে ইটভাটায় শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করলেও নীরব ভূমিকায় প্রশাসন। 

চিকিৎসকরা জানান, ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় মানুষের হাঁপানি, কাশি, নিউমোনিয়া, অ্যালার্জি, ক্যান্সারসহ নানা রোগ হতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তারা এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে থাকে। ইটভাটায় শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সরেজমিন জেলার বিভিন্ন ভাটায় গিয়ে দেখা যায়, ইট বানানো থেকে পোড়ানোর কাজ করছে শিশুরা। অনেকে ইট শুকানো ও ঠেলাগাড়িতে করে তা আনা-নেওয়ার কাজও করছে। দেশের শিশু শ্রম আইন অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না শিশুদের। মুন্সীগঞ্জের ইটভাটাগুলোয় সেই আইন না মেনে অবাধে চলছে শিশু শ্রম। পরিবারের আর্থিক সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিশুদের দিয়ে ইট বানানো থেকে শুরু করে পোড়ানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ নানা কাজ করাচ্ছেন ইটভাটা মালিকরা। প্রশাসন বলছে, শিশুদের শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

সরেজমিনে যায়, প্রতিটি ইটভাটায় ৩০ থেকে ৪০ জন শিশু কাজ করছে। কোনো কোনো ভাটায় অর্ধশতাধিক শিশু রয়েছে। মা-বাবার পাশাপাশি শিশুরা টানছে ইটের বোঝা, কখনো ঠেলছে ঠেলা আবার কখনো উল্টে দিচ্ছে রোদে শুকাতে দেওয়া ইট। এ ছাড়া কয়লা গুঁড়া করা এবং পোড়ানোর জন্য সারিবদ্ধভাবে চুল্লিতে একের পর এক কাঁচা ইট সাজাচ্ছে তারা। কয়লা পুড়িয়ে কাঁচা ইট লালচে হলে আবার চুল্লি থেকে বের করে বিক্রির জন্য কাজেও ব্যস্ত এসব শিশু। ভাটায় কাজ করা অনেক শিশু শ্বাসকষ্ট, চর্মসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ঝুঁকিতে পড়ছে তাদের ভবিষ্যৎ।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর