রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১২ ০০:০০ টা

বিশ্বজিতের শরীরে চার ধরনের অস্ত্রের ২৫টি কোপের চিহ্ন

\'কোপা\' শাকিল আট দিনের রিমান্ডে

বিশ্বজিতের শরীরে চার  ধরনের অস্ত্রের ২৫টি কোপের চিহ্ন
কিল-ঘুষি, লাথি ছাড়াও বিশ্বজিৎ দাসের শরীরে চাপাতি ও ছুরিসহ চার ধরনের অস্ত্রের অন্তত ২৩ থেকে ২৫টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্বজিতের মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে বিশ্বজিতের লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। মর্গ সূত্র জানায়, শনিবার হাসপাতালের পক্ষ থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বিশ্বজিৎ দাসের লাশের ময়নাতদন্তের এ প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, কিল-ঘুষি, রড ও লাঠির আঘাত ছাড়াও ছুরিকাঘাত ও চাপাতির কোপের আলামত পাওয়া গেছে। চাপাতির কোপে বিভিন্ন জায়গার মাংস বিচ্ছিন্ন ও থেঁতলে যায়। হাড় কেটে গভীর ক্ষত হয়। অপরদিকে উপর্যুপরি ছুরির আঘাতে কিডনি ও রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশ্বজিতের শরীরে চিকন রড ঢুকিয়ে দেওয়ায় কারণে মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রমতে, ডান হাতের বাহুর পেছনের দিকে ধারালো অস্ত্রের ছয় থেকে সাতটি আঘাত রয়েছে। এসব আঘাতে মাংস ভেদ করে হাড়ের বেশির ভাগ অংশ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে_ শাকিলের হাতে থাকা চাপাতির উপর্যুপরি কোপের কারণেই গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া কোমর, পিঠ, পা ও মাথায় ছোট-বড় আরও ১০ থেকে ১২টি ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তকারী মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাকসুদুর রহমান বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বিভিন্ন ক্ষতস্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই বিশ্বজিৎ দাসের মৃত্যু হয়েছে। 'কোপা' শাকিল আট দিনের রিমান্ডে : বিশ্বজিৎ দাসের ওপর হামলার সময় চাপাতি হাতে থাকা সেই যুবক রফিকুল ইসলাম ওরফে 'কোপা' শাকিলকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক তাজুল ইসলাম গতকাল বিকাল ৩টায় শাকিলকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। এ সময় আসামি শাকিলের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় হাকিম তাকে আত্দপক্ষ সমর্থনে তার কিছু বলার আছে কি না জানতে চান। জবাবে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো শাকিল প্রথমে দুই দিকে মাথা নেড়ে 'না' জানান। পরে আদালতকে বলেন 'স্যার আমার বাবা শনিবার মারা গেছেন, এখন আমার আর কেউ নেই।' এ সময় শাকিল কান্নায় ভেঙে পড়েন আদালতে। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক এরফান উল্লাহ আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে দুপুর থেকেই আসামি শাকিলকে এক নজর দেখার জন্য উৎসুক জনতা আদালত পাড়ায় ভিড় জমাতে থাকে। তারা বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার দাবি করেন এবং শাকিলের ফাঁসি চাই বলে স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। শাকিলকে নিয়ে এই মামলায় মোট ছয় আসামিকে রিমান্ডে নিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে যাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তারা হলেন, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এইচ এম কিবরিয়া, কাইয়ুম ওরফে টিপু, রাশেদুজ্জামান শাওন ও সাইফুল ইসলাম।

সর্বশেষ খবর