রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৩ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশন নিয়ে মাথা ব্যথা নেই বিএনপির

জাতীয় নির্বাচনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানার আগে নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের। তত্ত্বাবধায়কের দাবি মেনে নিলে আলোচনার মাধ্যমে অন্যসব সমস্যারই সমাধান হবে বলে মনে করেন বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতারা। তাদের মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলো জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মূল দাবি। এটা মেনে নিলে সব সমস্যারই সমাধান হবে। কারণ নির্বাচন কমিশন, সেনাবাহিনী, সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট আনুষঙ্গিক সব প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা ও কার্যক্রমের প্রসঙ্গ আসবে। তা ছাড়া বর্তমান সরকার নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নিলে এ ব্যাপারে সংবিধানে অনেক সংশোধনীও আনতে হবে। তখন আলোচনার মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ও ভূমিকা নির্ধারণ করা হবে। আর তখন প্রয়োজন অনুসারে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করা হবে, নাকি সংস্কার করা হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিলে নির্বাচন কমিশনসহ আর সবকিছুরই সমাধান হয়ে যাবে। তবে নির্দলীয় সরকারের দাবি মানতেই হবে। তা না হলে নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণও করব না এবং হতেও দেব না। কারণ আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দিয়ে আমরা মরতে চাই না। তিনি আরও বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়কের 'বেনিফিশিয়ারি' হচ্ছে আওয়ামী লীগ। তাদের শপথ নেওয়ার সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তার দল উপস্থিত থেকে স্বীকৃতি দেন। এরপর তারা ক্ষমতায় যান। সাড়ে চার বছর চলে গেলেও এখন পর্যন্ত সেই সরকারের একজন লোকের বিরুদ্ধেও তারা ব্যবস্থা নেননি। কাজেই ওই অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (ফখরুদ্দীনের) উদাহরণ দিয়ে আর খোঁড়া কোনো যুক্তি দিয়ে নির্দলীয় সরকারের বর্তমান জনদাবি এড়ানো যাবে না কিছুতেই। স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকর পুনঃপ্রবর্তনের পর নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব বিষয়েই আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কাজেই মূল বিষয় হলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। তা হয়ে গেলে অন্য কোনো বিষয়ই আটকে থাকবে না। তবে যেহেতু বর্তমান সরকার এককভাবে এ কমিশন গঠন করেছে, সেহেতু হয় তা বাতিল, না হয় পুনর্গঠন তো অবশ্যই করতে হবে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল দাবি মেনে নেওয়ার পর নির্বাচন কমিশন, আর্মি, প্রশাসন সবকিছু নিয়েই আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত সেসব বিষয় নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ১৮ দলীয় জোটের শরিক বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, সরকার আগে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানবে তারপর নির্বাচন কমিশন নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। কারণ আগে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। তারপর সে ভোট কীভাবে হবে তা নিয়ে আলোচনা। সে ক্ষেত্রে ইসি ছাড়াও সব ধরনের প্রশাসনের বিষয়ও আসবে। কারণ এ সরকারের আমলে নির্বাচনসংক্রান্ত যেসব ক্ষেত্রে দলীয় নিয়োগ বা পোস্টিং দেওয়া হয়েছে সেগুলো বাতিলপূর্বক নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিতে হবে। কাজেই আপাতত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাইরে অন্য কোনো কিছু নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।

সর্বশেষ খবর