রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা

আল বিদা মাহে রমজান

অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম

আল বিদা মাহে রমজান

আজ ২৫ রমজান। বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে মাহে রমজানের রোজা কবে শুরু হয়েছে তা বলা কঠিন। তবে এতটুকু বলা যায়, যখন এখানে ইসলাম এসেছে তখন থেকেই রমজানের সিয়াম পালন শুরু হয়েছে। যত দূর জানা যায়, আরব বণিকদের মাধ্যমে ইসলামের খবর বাংলাদেশে এসে পেঁৗছে। ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে রমজান মাসকে আল্লাহতায়ালা সিয়ামের মাস হিসেবে নির্দিষ্ট করে দেন। স্বভাবতই মাহে রমজান বা শাহরু রমাদান মুসলিম মননে নতুনভাবে স্থান করে নেয়। তখনো বাংলাদেশে ইসলামের খবর ব্যাপকতা লাভ করেনি। ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে মক্কার কুরাইশ মুশরিকদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি বা হুদায়বিয়ার সন্ধি সম্পাদন হলে একটা শান্তির পরিবেশ দানা বেঁধে ওঠে আরব দেশে। ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে প্রিয় নবী (সা.) বিভিন্ন দেশের রাজাদের কাছে দূতের মাধ্যমে ইসলামে দাখিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দাওয়াতপত্র পাঠান। তখন থেকেই কোনো কোনো সাহাবি আরব বণিকদের নৌজাহাজে করে চীন-সুমাত্রা যাওয়ার পথে বাংলাদেশের নৌবন্দরে অবতরণ করে ইসলাম প্রচার করেন। তাদের কারও কারও কবর এখনো চীনের ক্যান্টন শহরের ম্যাসেনজার মসজিদের পাশে রয়েছে।

বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচারের সূচনা হয় ৬৪০ খ্রিস্টাব্দে হজরত উমর (রা.)-এর খিলাফতকালের মধ্যভাগে। এখানে উল্লেখ্য, হজরত উমর (রা.) এর এক বছর আগে ৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে হিজরি সন প্রবর্তন করেন। বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের গতি বৃদ্ধি করেন পীর-আউলিয়া বা সুফিয়ায়ে কিরাম। এ সময় ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম রমজানের সিয়াম এখানে পালন হতে থাকে। সেহরি, ইফতার, তারাবি, শবেকদর, জুমাতুল বিদা, ইতিকাফ ইত্যাদির সঙ্গে একাত্দ হয়ে যায় বাংলার মুসলিমরা। একে কেন্দ্র করে এক নতুন সাংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টি হয়। রমজানের চাঁদ দেখা, ইফতারের খাদ্য ও পানীয় সামগ্রী, রোজাদারকে খাওয়ানো, ঈদের প্রস্তুতি, সেহরির সময় ঘুমন্তদের জাগিয়ে তোলা ইত্যাদি বাঙালি সংস্কৃতিতে যোগ হয়। এসব নিয়ে নতুন নতুন সাহিত্য রচিত হয়, কাব্যিক অধ্যায় সূচিত হয়, খাদ্যাভ্যাস সৃষ্টি হয়। বর্তমানকালে স্বাধীন বাংলাদেশে রমজান, ঈদ, শবেকদর সব যেন এক আলোকিত সড়কের দিশা দেয়। মিডিয়াগুলোর ব্যস্ততাও লক্ষণীয়। প্রত্যেক পত্রিকায় মাহে রমজানের কলাম, রেডিও-টেলিভিশনে রমজান-বিষয়ক নানা প্রোগ্রাম সত্যি মনোজগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

 

 

সর্বশেষ খবর