শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা

ঐশীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

বাবা-মাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার ঐশী রহমানকে কারাগারে যেতে হচ্ছে। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম ও কিশোর আদালতের বিচারক আনোয়ার সাদাত সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে ঐশী প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসার সিদ্দিকুর রহমান। পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলার আসামি তাদের মেয়ে ঐশী সাবালিকা নাকি নাবালিকা, এ প্রশ্নের ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত আদালতের নির্দেশেই ঐশীকে গাজীপুরের কিশোরী ?উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। এদিকে গতকাল বিকালে বয়স নির্ধারণ ও শারীরিক পরীক্ষার কাগজপত্রে স্বাক্ষরের জন্য ঐশীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ফরেনসিক বিভাগের কাগজপত্রে স্বাক্ষর দেয় ঐশী। সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসার সিদ্দিকুর রহমানের আবেদনে বলা হয়, শিশু ছাড়া কোনো আসামি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকতে পারে না। ঐশীর বয়স আঠারোর ওপরে। এ কারণে তিনি শিশু নন। তাই খুলনার শিশু ক্লিনিক থেকে ঐশীর জন্মসনদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ক্লিনিকেই ঐশী জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জন্মসনদ অনুযায়ী তার বয়স আঠারোর ওপরে। যে কারণে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হোক। আবেদনে আরও বলা হয়, ঐশীর ক্ষেত্রে শিশু আইন ১৯৭৪ প্রযোজ্য হবে। কারণ এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ১৪ আগস্ট রাতে। যে কারণে ঐশীর ক্ষেত্রে শিশু আইন-২০১৩ প্রযোজ্য হবে না। অপরদিকে গতকাল এ মামলার আরও তিন সাক্ষীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত। তারা হলেন_ ঐশীর খালা কুলসুম বেগম, সিএনজি চালক শেখ ইমান আলী ও তাসলিমা আক্তার। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আবুল খায়ের মাতব্বর এই তিন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন আদালতের কাছে। ২৫ আগস্ট ঐশী ও কাজের মেয়ে সুমী আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ঐশী তার স্বীকারোক্তিতে বিচারককে বলেন, 'আমি নিজে বাবা-মাকে হত্যা করেছি। প্রথমে বাবাকে হত্যা করি। আর পরে মাকেও হত্যা করি।' ঐশী তার স্বীকারোক্তিতে জনি নামের এক বন্ধুর কথা উল্লেখ করেন। জনির আশ্বাসে ঐশী তার বাবা-মাকে হত্যা করে। এ ছাড়া এ হত্যা মামলায় গ্রেফতার রনি নামের ঐশীর আরেক বন্ধুকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত। ১৪ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চ্যামেলীবাগের বাসায় পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান খুন হন। মাহফুজ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের রাজনৈতিক অধিশাখায় কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী স্বপ্না এবং দুই ছেলেমেয়ে ও এক শিশু গৃহকর্মী নিয়ে চ্যামেলীবাগের বাসায় থাকতেন তিনি। ঐশী ধানমন্ডির অঙ্ফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ও লেভেলের শিক্ষার্থী। নিহত দম্পতিদের একমাত্র ছেলে ঐহী রহমান রাজারবাগ পুলিশ লাইনের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র।

সর্বশেষ খবর