শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

বিদেশি নাগরিকদেরও তদন্তের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু

বহুল আলোচিত ও সমালোচিত পদ্মা সেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলায় বিদেশি নাগরিকদেরও তদন্তের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)। বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার মধ্য দিয়ে আরসিএমপি বিদেশি নাগরিকদেরও তদন্তের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আরসিএমপির সহকারী কমিশনার জিলেস মিচাওদ মিডিয়াকে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন, আরসিএমপির ন্যাশনাল ইউনিটকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি তদন্তেরও ম্যান্ডেট দেওয়া হয়েছে। অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসের আদালতে বিচারাধীন পদ্মা সেতু সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার প্রি-ট্রায়াল শুনানির ঠিক আগের দিন বুধবার আরসিএমপি এসএনসি লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেসকে অভিযুক্ত করে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক জুলফিকার আলী ভূইয়াকেও অভিযুক্ত করে। এর আগে এসএনসি লাভালিনের সাবেক দুই কর্মকর্তা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ ইসমাইল এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত রমেশ শাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এখন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

আবুল হাসান চৌধুরী এসএনসি লাভালিনের নিযুক্ত লবিস্ট হিসেবে সরকারের ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এসএনসি লাভালিনের প্রতিনিধিদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১১ সালের মে মাসে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কেভিন ওয়ালেস এবং রমেশ শাহর মধ্যকার বৈঠকে সম্ভাব্য ঘুষ লেনদেন নিয়ে আলোচনা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। আবুল হাসান চৌধুরী ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছেন সিবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। তবে ওই বৈঠকে ঘুষ লেনদেন নিয়ে কোনো আলোচনার কথা তিনি নাকচ করে দেন। অপরদিকে জুলফিকার আলী ভূইয়া সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি কানাডিয়ান নাগরিক হলেও বাংলাদেশে তার ব্যবসা রয়েছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের অনুরোধে পদ্মা সেতু দুর্নীতির তদন্ত শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে আরসিএমপির প্রতিনিধি দল টরন্টো এবং মন্ট্রিয়লে অনুসন্ধান চালালেও পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য সংগ্রহ করেছে এবং নানা ধরনের দলিলপত্র সংগ্রহ করেছে। বাংলাদেশে তদন্ত করতে গিয়ে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আরসিএমপি এই মামলার তদন্তের আওতায় বাংলাদেশি নাগরিকদেরও আনার সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশি অন্যান্য নাগরিকদের সম্পৃক্ততা নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানা গেছে। অন্টারিওর কোর্ট অব জাস্টিস থেকে সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসের আদালতে গিয়ে মামলার বিচারের প্রাক-শুনানি তিন দফায় পিছিয়ে গেলে এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জনও তৈরি হয়। প্রথম দুই দফা অভিযুক্তদের অনুপস্থিতি এবং প্রস্তুতিহীনতার কারণেই প্রাক শুনানি পিছিয়ে গেলেও ৯ সেপ্টেম্বরের শুনানি পিছিয়েছে মূলত প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। সেদিন প্রসিকিউশন থেকে বলা হয়েছিল তারা মামলায় নতুন কিছু দলিলপত্র উপস্থাপন করতে চান। ১৯ সেপ্টেম্বরের শুনানির নির্ধারিত দিনের ঠিক আগের দিন আরসিএমপি আবুল হাসান চৌধুরী, জুলফিকার আহমদ ভূইয়া এবং কেভিন ওয়ালেসকে অভিযুক্ত করল।

সর্বশেষ খবর