চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো লেগুনাচালক মো. মিতুলকে (২২)। তিনি গত ৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার সময় যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার সময় পলিটেকনিক মোড়ে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রলবোমায় অগি্নদগ্ধ হন। এতে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। মারাত্দকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার শ্বাসনালি। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার সময় তিনি মারা যান। তার স্বজনরা জানিয়েছেন, মিতুল ভোলার দৌলতখান এলাকার মোহাম্মদ হান্নানের ছেলে। তিনি চট্টগ্রামের শেরশাহ বাংলাবাজার এলাকায় থাকতেন। এদিকে গতকাল ঢাকা মেডিকেলের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, টানা অবরোধ ও হরতালে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রলবোমায় দগ্ধ মানুষগুলো অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তীব্র শীতে বেড়ে গেছে তাদের কষ্ট-যন্ত্রণা। নেই অর্থ সামর্থ্য। ক্ষত না শুকানোয় মাসের পর মাস হাসপাতালেই দিন কাটাতে হচ্ছে।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থশংকর পাল বলেন, গত ২৬ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত ৭৩ দিনে হরতাল-অবরোধের সময় আগুন, পেট্রলবোমাসহ সহিংসতায় দগ্ধ হওয়া ৯৮ জন রোগীকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। মারা গেছেন ২২ জন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পেট্রলবোমায় দগ্ধ এবং হরতাল-অবরোধে নানাভাবে আহতদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দগ্ধ ব্যক্তিদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য দগ্ধ রোগী ও তাদের স্বজনদের যাতে কোনো টাকা খরচ করতে না হয়, সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বার্ন ইউনিটে সরকারিভাবেই ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য কেউ তাৎক্ষণিকভাবে টাকা খরচ করে ফেললে রসিদ দেখালেই ওই টাকা ফেরত দেওয়ার বিধান রয়েছে।