বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজয় দুঃখজনক

কাজী জাফরউল্লাহ

স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজয় দুঃখজনক

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে আমার পরাজয়ের ঘটনা দুঃখজনক। বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা আমাকে ভোট দেয়নি। তারা ভোট দিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিঙ্ন চৌধুরীকে। এ ছাড়া আমার নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যারা নির্বাচনী দায়িত্বে ছিলেন, তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেতে পারেননি। নিজের বনানী অফিসে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গতকাল এসব কথা বলেন কাজী জাফরউল্লাহ। বর্তমান সরকারের নতুন মন্ত্রিসভা কেমন হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। প্রবীণ ও নবীনের সমন্বয়ে গঠন করা বর্তমান মন্ত্রিসভা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি সুন্দর মন্ত্রিসভা উপহার দিয়েছেন। বিগত মন্ত্রিসভার কয়েকজন মন্ত্রী বর্তমান মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাননি, এটি একটি ভালো দিক। নতুনদের মন্ত্রিসভায় যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিসভা গঠনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সতর্ক সংকেত দিয়েছেন। সবাইকে সাবধানে কাজ করতে হবে। মন্ত্রীদের দেশ ও জনগণের স্বার্থে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে দেশ কেমন চলছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। উন্নয়ন-অগ্রগতির ছোঁয়া মানুষের দ্বারপ্রান্তে পেঁৗছে গেছে। দেশবাসী শান্তিতে আছে। উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের অংশ নেওয়ার বিষয়ে কাজী জাফরউল্লাহর মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এটি গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক ঘটনা। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ জরুরি। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকে মজবুত করতে হলে সবারই নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রয়োজন। কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে যাদের সমর্থন দেওয়া হয়েছে তারা বিজয়ী হবেন বলে মনে করি। বিএনপির মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র শুরু করে। পিলখানায় নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তারা মহাজোট সরকারের পতন ঘটানোর চক্রান্ত করেছিল। এখন আবার মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি তুলছে। তাদের এ দাবি সমীচীন নয়। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে নাশকতা সৃষ্টি করায় তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের এ পথ পরিহার করা দরকার। যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় থেমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধ মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর বিচারকাজ দ্রুত শেষ করা উচিত। তবে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে দলকে ঢেলে সাজানো হবে। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি করে দলকে আরও শক্তিশালী করা হবে। এতে সাবেক ছাত্রনেতাসহ নারীদের নেতৃত্বে আনার পরিকল্পনা আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দলে নারী নেতৃত্ব বৃদ্ধি করা হবে। বিভিন্ন কমিটিতে ২০ ভাগ নারীকে নেতৃত্বে আনার পরিকল্পনা আছে। মে মাসে উপজেলা নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পর সারা দেশে দলীয়ভাবে জেলা সফরের মাধ্যমে দল গোছানোর কাজ শুরু হবে। ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় সম্মেলন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। কমিটিতে দলের ত্যাগী, মেধাবী ও যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর