বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

এমপিদের ফিরে আসার ডাক

এমপিদের ফিরে আসার ডাক

দলের এমপিদের ফিরে আসার ডাক দিলেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গতকাল জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে পার্টি চেয়ারম্যানের মতবিনিময় সভায় মাত্র তিনজন দলীয় এমপি অংশ নিয়েছেন। এ সভায় বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, দলের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মসিউর রহমান রাঙ্গা, মজিবুল হক চুন্নু, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিদের কেউই যাননি। শুধু রুহুল আমিন হাওলাদার ও সালমা ইসলাম এতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ৩০ এমপি এরশাদের আহ্বানে সাড়া দেননি। ফলে সভায় ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করে এরশাদ ওই এমপিদের উদ্দেশে বলেছেন, আমন্ত্রণ পেয়েও তোমরা আসনি। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছ। আর এখানে আসবে না। শেষবারের মতো বলছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিরে আস। নইলে রাজনীতিতে তোমাদের স্থান হবে না। গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন জেলার নেতারা অংশ নেন। সভার সূচনা বক্তব্যে এরশাদ আরও বলেন, ওরা ফিরে না এলে কি চলবে না? জবাবে নেতাকর্মীরা বলেন, ওরা পচা মাল, ওদের প্রয়োজন নেই। বহিষ্কার করুন। তাদের এ বক্তব্য শুনে এরশাদ বলেন, আমি এটিই শুনতে চেয়েছিলাম। ওরা আমারই সন্তান। একবার সুযোগ দেব। এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টিতে সংকট আছে। তবে মহাসংকট নয়। এ সংকট কেটে যাবে। আমি যেখানে আছি জাপা সেখানে থাকবে। আমি এর স্রষ্টা। নেতাদের উদ্দেশে বলেন, সামান্য মোহ ও পদের কারণে বন্ধন ছিন্ন কর না। যারা আমার নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে গেছে তাদের ভালো-মন্দ আমি দেখব। অনেক কথা বলার ছিল। সব কথা বলা যাবে না। সভায় দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপির সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, ফয়সাল চিশতী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম রুবেল, ইসহাক ভঁূইয়া প্রমুখ। ১২ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সিএমএইচে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার দুমাস পর গতকাল এরশাদ নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। এর মধ্যে এরশাদের নির্দেশে জাতীয় পার্টির প্রায় ২শ' নেতা-কর্মী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এরই মধ্যে এরশাদ নিজেও এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী তাকে বিশেষ দূত করায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, একটা নির্বাচন হয়ে গেল। এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না। আমি কেন নির্বাচন করিনি সেটা আজ বলব না। চেয়ারম্যান যেটা বলে, সেটা সঠিক বলে ধরে নিতে হবে। এরশাদ বলেন, যে ৩০ জন এমপি আজকের সভায় আসেননি, তারা কি জাতীয় পার্টির বাইরে? জাতীয় পার্টিকে বিভক্তির যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ৩০ এমপি নিয়ে দল নয়, লক্ষ-কোটি মানুষ নিয়ে দল। নেতাকর্মীদের বলেন, যারা দলের চেয়ারম্যানের নির্দেশ উপেক্ষা করে নির্বাচনে গেছেন, তাদের চিনে রাখ। সভাপতির বক্তব্যে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার পার্টির চেয়ারম্যানের উদ্দেশে বলেন, অনুকূল-প্রতিকূল সব পরিস্থিতিতে আপনি পার্টির পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। আপনি দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আর আমরা যারা আপনার সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘপথের সাথী হয়ে আপনার কাছে বহু পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি তাদের প্রতি সদয় থাকবেন এটাই আমরা বিশ্বাস করি। আর দল ছেড়ে যারা চলে গেছেন, আসা-যাওয়াই যাদের সংস্কৃতি তাদের আপনার বিশাল হৃদয় দিয়ে বারবার ক্ষমা করছেন। কিন্তু আপনার সহকর্মীরা অবশ্যই এদের বিষয়ে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকবে। _নিজস্ব প্রতিবেদক

 

সর্বশেষ খবর