শিরোনাম
রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

বিদেশে আরও ছয় নতুন দূতাবাস

ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া পোল্যান্ডের সব প্রস্তুতি শেষ

বিদেশে বাংলাদেশের আরও ছয়টি দূতাবাস চালুর কাজ এগিয়ে চলছে। এর মধ্যে ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও পোল্যান্ডের রাজধানীতে দূতাবাস স্থাপনের জন্য সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনও পাওয়া গেছে। ইউরোপের এ তিন দেশে দূতাবাস স্থাপনের পরপরই আফগানিস্তান, সুদান ও সিয়েরা লিওনে দূতাবাস স্থাপনের কাজ এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের অংশ হিসেবে গত বছর নতুন পাঁচটি মিশন খোলা হয়েছিল। সেই উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় এই নতুন দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য-বিনিয়োগের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে তিন দেশে নতুন দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে হিসেবে কোপেনহেগেন, ভিয়েনা ও ওয়ারশে বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস খোলা হচ্ছে। এর মধ্যে পোল্যান্ডের ওয়ারশে এর আগেও বাংলাদেশের দূতাবাস ছিল। কিন্তু ২০০২ সালে তৎকালীন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের দূতাবাসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পোল্যান্ডের দূতাবাস খোলার অপরিহার্যতার কারণ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য। এ দেশটিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি চা রপ্তানি হয়। এ ছাড়া ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গার্মেন্ট পণ্যও রপ্তানি হয় এই দেশে। অপরদিকে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় রয়েছে জাতিসংঘের ১৫টি উন্নয়ন সংস্থার প্রধান কার্যালয়। কার্যালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি অস্ট্রিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেশিনারিজ আমদানি করার জন্য সেখানে বাংলাদেশের দূতাবাসের প্রয়োজন রয়েছে। পোল্যান্ড অস্ত্র-গোলাবারুদেরও অন্যতম সরবরাহকারী। এসব দ্বিপক্ষীয় কাজ দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে করার লক্ষ্য নিয়ে অস্ট্রিয়ায় নতুন দূতাবাস খোলা হচ্ছে। অন্যদিকে একসময় বাংলাদেশকে জাহাজ দেওয়া দেশ ডেনমার্ক এখন বাংলাদেশের জাহাজের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি সফটওয়্যার সংগ্রহকারী দেশও ডেনমার্ক। বাংলাদেশের এ দুই খাতের উন্নয়নে ডেনমার্কের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তাও আছে। ডেনমার্কের সরকারি সাহায্য সংস্থা ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ডানিডা) বাংলাদেশের গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়াও ডেনমার্ককে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার হিসেবেও দেখা হচ্ছে। সেখানে ক্রমেই বাড়ছে বাংলাদেশির সংখ্যা। আবার বিশ্বের অনেক দেশে ডেনমার্ক তাদের দূতাবাসের কার্যক্রম সঙ্কুচিত করলেও বাংলাদেশে তাদের কাজের পরিধি বাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ডেনমার্কে নতুন নতুন ব্যবসার সম্ভাবনা অনুসন্ধানে বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে দেশটি। এসব কারণেই রাজধানী কোপেনহেগেনে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক দূতাবাস স্থাপন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ায় এ তিন দূতাবাস আগামী দুই মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করতে পারে। সূত্র জানায়, ইউরোপের তিন দেশের পরই আফগানিস্তান, সুদান ও সিয়েরা লিওনের দূতাবাসের বিষয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে সুদান ও সিয়েরা লিওনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অনেক বাংলাদেশি সেনাসদস্য কর্মরত রয়েছে। এ দুই দেশে কৃষি খাতে জনশক্তি রপ্তানি ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি ও আরও নানাবিধ ব্যবসার সম্ভাবনা আছে। এ কারণে চলতি বছরের মধ্যেই মিশন খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তিত আফগানিস্তানে বৈশ্বিক বিবেচনার পাশাপাশি বাণিজ্যিক সম্ভাবনার বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে গত বছর মেক্সিকো, ব্রাজিল, লেবানন, মরিশাস ও পর্তুগালে পূর্ণাঙ্গ মিশন চালু করেছে বাংলাদেশ। স্থাপন করা হয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক শহর মুম্বাইয়ে ডেপুটি হাইকমিশন। সব মিলিয়ে এখন ৬৯টি দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস বা হাইকমিশন রয়েছে। এ ছাড়া কনস্যুলেট, ডেপুটি হাইকমিশন, এসিস্ট্যান্ট হাইকমিশন ও ভিসা সেন্টার রয়েছে ৫২ দেশে।

 

সর্বশেষ খবর