রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

নীলক্ষেতে ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ, আহত ১৫

রাজধানীর নীলক্ষেতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে দোকানিদের সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয়ে আধাঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি দোকান ও গাড়িতে অগি্নসংযোগ করা হয়। পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আহতদের কয়েকজন হলেন নূর ইসলাম সোহান, সাবি্বর হোসেন, আবু সায়েম, আশরাফুল, শিমুল, শাহাদৎ হোসেন, আবদুল আলিম, বাবুল আক্তার প্রমুখ। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে জহুরুল হক হলের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নূর ও তার বন্ধুদের সঙ্গে নীলক্ষেতে বই কিনতে গিয়ে দরকষাকষি হয়। একপর্যায়ে তা থেকে বাকবিতণ্ডায় রূপ নেয়। এ সময় দোকানদাররা তাদের মার্কেটের ভেতরে একটি কক্ষে নিয়ে ছাত্রদের বেধড়ক মারধর করে। এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ শিক্ষার্থী রড, লাঠি নিয়ে মার্কেটের দিকে যেতে থাকে। জহুরুল হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এফ রহমান হল, মুহসীন হলসহ বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা যোগ দেয়।

প্রথমে শিক্ষার্থীরা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিক থেকে ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের পরপর দুবার ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকিয়ে দেয়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তখন দুই পক্ষ হতেই ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। এরপর বিক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর ও ফুটপাতের বইয়ের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। অন্যান্য দোকান ভাঙচুর শুরু করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পুলিশের রাবার বুলেটে অনেকে আহত হয়। এ সময় অন্যান্য ক্রেতারা অতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে পুলিশ এসে কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শিক্ষার্থীদের আগুনে সর্বস্বান্ত হয়ে অনেক ব্যবসায়ীকে বিলাপ ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, যে দোকানের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে, সেটার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। আমাদের সবার তো কোনো দোষ নেই।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখ বন্ধ করে দেয়। শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ছোড়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এ এম আমজাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্রেতাদের ব্যবসাসুলভ মানসিকতা থাকা দরকার। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে না ঘটে এ জন্য হকার্স মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে।

সর্বশেষ খবর