রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

*********************

*********************

ঘড়ির কাঁটায় ১০টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই খেলা শুরুর বাঁশি বাজান সার্বিয়ান রেফারি মিলোরাড ম্যাজিক। পুরো বিশ্বের দৃষ্টি তখন নিবদ্ধ ব্রাজিলের বেলো হরিজন্টের দিকে। মিনেইরাও স্টেডিয়ামে আকাশি-সাদার ঢেউ। মেসির কাছে বল যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গর্জে উঠছিল পুরো গ্যালারি। টিভির সামনে বসা কোটি কোটি ভক্তরাও পিছিয়ে ছিলেন না। তারাও চিৎকার করে আর্জেন্টিনাকে সমর্থন জানিয়েছেন। উপভোগ করেছেন মেসি-আগুয়েরো-হিগুয়েন-ডি মারিয়াদের জাদুকরী ফুটবল। গতকাল সন্ধ্যার পর পরই রাজধানী ঢাকার রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। যে যার মতো কাজ সেরে দ্রুত ঘরে ফিরে যান। শুধু রাজধানী নয়, গোটা দেশের চিত্রও তাই। সন্ধ্যার পর সবাই বসে যান টিভির সামনে। মেসির আর্জেন্টিনার খেলা বলে কথা! আর্জেন্টিনা ভক্তরা তো বটেই, ব্রাজিল ভক্তরাও ইরানের বিরুদ্ধে ম্যাচটি দেখার জন্য প্রতীক্ষায় ছিলেন। কেননা আগের ম্যাচে ব্রাজিল মেক্সিকোর বিরুদ্ধে গোলশূন্য করায় তারা চেয়েছিলেন এই ম্যাচে আর্জেন্টিনা ইরানের বিরুদ্ধে পরাজিত হোক কিংবা ড্র করুক!

প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টাইনদের খেলা দেখে মন ভরেনি ভক্তদের। মেসিদের রক্ষণাত্দক ফুটবল দেখে কার-ই বা ভালো লাগে! তবে গতকাল ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্দক ফুটবল খেলেন আলবেসিলেস্তরা। দুই স্টাইকারকে সামনে পাওয়ায় এ ম্যাচে লিওনেল মেসি ছিলেন অনেকটা স্বাধীন, ঠিক বার্সেলোনায় যেমন। ইরানি ডিফেন্ডারদের টার্গেটই ছিল মেসিকে আটকে দেওয়া। তারা খুব ভালো করেই জানতেন এক মেসিকে আটকাতে পারলেই কেবল ম্যাচে ভালো কিছু আশা করা সম্ভব। তাই ডিফেন্সে তারা পাঁচজনকে রেখেছিলেন। ইদানীং পারসিরা অনুসরণ করে ইতালিয়ান ফুটবল। ডিফেন্সকে শক্তিশালী করে পাল্টা আক্রমণের ওপর নির্ভর করা। অবশ্য এই কৌশলে ইরানিরা প্রথম ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে সফলও হয়েছে। ওই ম্যাচে গোলশূন্য ড্র হলেও বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ করেছিল ইরানিরা। এর আগে বিশ্বকাপে ইরানিদের বড় অর্জন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয়। ১৯৯৮ সালের এই ২১ জুনেই তারা মার্কিনিদের ২-১ গোলে হারিয়ে দেশে বীরোচিত সংবর্ধনা পেয়েছিল। তবে এবার মেসিদের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পেয়েই উচ্ছ্বসিত ইরানিরা। তারপরেও আর্জেন্টিনাকে হারানোর পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নেমেছিল তারা। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে দিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা শুরুটা করেছিল উড়ন্তভাবে। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়ে হঠাৎ করে জার্মানির বিরুদ্ধে হজম করে বসে ৪ গোল। তাই এবার শুরু থেকেই অনেক বেশি সতর্ক কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা। কিন্তু বসনিয়ার বিরুদ্ধে এত বেশি সতর্ক ছিলেন যে আর্জেন্টাইনদের খেলাই ছিল ভক্তদের কাছে বিরক্তিকর। তাই এ ম্যাচে আর অতি রক্ষণাত্দক কৌশলের দিকে যাননি সাবেলা। তাছাড়া মেসি নিজেও রক্ষণাত্দক ফুটবলের পক্ষে নন। এ নিয়ে নাকি কোচের সঙ্গে তার হালকা খুনসুটিও হয়েছিল। ভক্তরাও আর্জেন্টিনার এমন রণকৌশলে অবাক হয়েছিলেন। বসনিয়াকে হারিয়ে সাবেলার শিষ্যরা তিন পয়েন্ট পেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও গুগল প্লাসে সমালোচনার ঝড় ওঠেছিল।

অধিকাংশ স্ট্যাটাসে মুণ্ডুপাত করা হয়েছে সাবেলার। সে কারণেই কিনা ইরানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমণ শানিত করতে থাকেন মেসিরা।

 

 

 

সর্বশেষ খবর