রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

বালোতেল্লিই ইতালিকে ডুবিয়েছেন

বালোতেল্লিই ইতালিকে ডুবিয়েছেন

সহজ সহজ গোলের সুযোগ হারালে দল যতই শক্তিশালী হোক না কেন ফলাফল সুখকর হয় না। এর বড় প্রমাণ মিলল শুক্রবারের ম্যাচে। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকা পিছিয়ে থেকেও উরুগুয়েকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে। শুক্রবার কোস্টারিকার বিপক্ষে ইতালিই ছিল ফেবারিট। ম্যাচের শুরু থেকে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা যে গতিময় খেলা খেলছিল তাতে মনে হচ্ছিল তারা সহজভাবে জিতেই মাঠ ছাড়বে। আসলে আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও শুরুটা এত গতিময় ছিল না। যে জিতবে তারাই শেষ ষোল নিশ্চিত করে ফেলবে। তাই ইতালি শুরু থেকেই ছিল মরিয়া। এগিয়ে যাওয়ার আশায় রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা ওপরে উঠে আক্রমণ চালাচ্ছিলেন। মিড ফিল্ডার আন্দ্রেয়া পিয়েরলোর প্রশংসা না করলে নয়। ইতালির আক্রমণে মূলত তিনিই ভূমিকা রাখছিলেন। বালোতেল্লিকে যে দুটো পাস দেন তাতে দুটোই গোল হওয়া উচিত ছিল। বুঝলাম না প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক কেইয়ালর নাভাসকে একা পেয়েও বালোতেল্লির মতো স্ট্রাইকার কেন গোল করতে পারলেন না। উঁচুমানের হলেও বালোতেল্লি মাঠে বুদ্ধি খাঁটিয়ে খেলেন না এ কথা অনেকেই বলেন। আমার মনে হয় এ কথা একেবারে ভুল নয়। আলতো শটেই যেখানে জালে বল জড়ায় সেখানে বালোতেল্লি কেন মিস করলেন এ প্রশ্ন অনেকের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এক কথায় আমি বলব, বালোতেল্লির দুটো মিসই ইতালিকে ডুবিয়েছে। শক্তির তুলনায় কোস্টারিকা দুর্বল হলেও আগের ম্যাচে তারা দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে। সুতরাং ইতালি ভালোমতোই জানত এ ধরনের দলের সঙ্গে সুযোগ নষ্ট করলে বিপদও ঘটতে পারে। বাস্তবে কিন্তু তাই হয়েছে। বালোতেল্লির সহজ দুটো সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরই অধিকাংশ তরুণকে নিয়ে গড়া কোস্টারিকা গতিময় খেলা শুরু করে দেয়। যা থামাতে ইতালির রক্ষণভাগ কুলিয়ে উঠতে পারছিল না। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে ব্রায়ান রুইজ যে গোলটি করেন এক কথায় আমি বলব অসাধারণ। ও যে পজেশনে ছিল সেখান থেকে জালে বল পাঠানো মুশকিলই ছিল। কিন্তু বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বুফনের মতো অভিজ্ঞ গোল রক্ষককেও বোকা বানিয়েছেন। এ গোলে আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন তারা। শেষ ষোল নয়, কোস্টারিকা যে খেলা খেলছে সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারলে আমি বলব, তারা শেষ চারেও জায়গা করে নিতে পারে। যাক এ হারেও ইতালির নকআউট পর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গোল পার্থক্য এগিয়ে থাকায় উরুগুয়ের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে ড্র করলেই চলবে। কিন্তু প্রতিপক্ষ উরুগুয়ে বলেই সন্দেহ রয়েছে ইতালি ড্রও করতে পারবে কিনা। প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হারার পর সুয়ারেজের প্রত্যাবর্তনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা যে খেলা খেলেছে তা ধরে রাখতে পারলে ইতালির কপাল পোড়ার শঙ্কা রয়েছে। আমি বলব সেদিন ফাইনালের আগেই আরেকটি ফাইনালের উত্তাপ থাকবে। এদিকে যত দিন যাচ্ছে ফ্রান্স যেন বুঝাতে চাচ্ছে তারাও বিশ্বকাপ ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিদার। অথচ রিবেরির মতো তারকা ইনজুরিতে বাদ পড়ায় অনেকে তাদের নিয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। প্রথম ম্যাচে হন্ডুরাসকে ৩-০ ও দ্বিতীয় ম্যাচে সুইসদের ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করে নকআউট পর্ব অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলেছে। রিয়াল মাদ্রিদে খেলা বেনজেমাতো আছেনই, আক্রমণভাগে তরুণরা যে খেলা খেলছেন তাতে '৯৮ সালে বিশ্বকাপ জিতলেও ফরাসিদের এতটা গতিময় দেখা যায়নি। দলের রক্ষণ ও মধ্যমাঠও বেশ সক্রিয়। ব্যালেন্সড বলতে যা বোঝায় তার সবই আছে ফ্রান্স দলে। গ্রুপ পর্বে যে ক'টা ম্যাচ দেখলাম সেখানে তাদের খেলা পুরোপুরি মুগ্ধ করেছে।

 

 

 

সর্বশেষ খবর