শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা
প্রথম টেস্ট শুরু আজ

বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর সিরিজ

বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর সিরিজ
অ্যাশেজ, বর্ডার-গাভাস্কার কিংবা ভারত-পাকিস্তান সিরিজের সঙ্গে তুলনায় আসে না কোনোভাবেই। জনপ্রিয়তা কিংবা আবেদনেও ধারে কাছে নেই। কিন্তু সিরিজটি নিয়ে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছে অলিখিত একটি লড়াই। রয়েছে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াই। অন্য দেশগুলোর সিরিজ নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা যে রকম মুখিয়ে থাকেন, সরব থাকেন সে রকম হয়তো নেই র‌্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা দুই দলের সিরিজ ঘিরে। তারপরও নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে এবং শক্তিমত্তা প্রমাণে লড়াইয়ে মরিয়া থাকে দুই দল। বসুন্ধরা সিমেন্ট সিরিজটি বাংলাদেশের শক্তিমত্তা বিচারের পাশাপাশি র‌্যাঙ্কিংয়ে উপরে উঠারও। র‌্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা দলটিকে খেলতে হবে কন্টিনেন্টাল কাপের শিরোপাধারীর বিপক্ষে ২০১৭ সালের পর। এসব বিবেচনায় সিরিজটির গুরুত্ব অ্যাসেজ কিংবা ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ের চেয়ে কম নয় কোনো অংশেই। আজ থেকে তাই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে দুদলই মরিয়া হয়েই লড়বে। কন্টিনেন্টাল কাপ এড়ানো নয়, নিজেদের ফিরে পাওয়ার লড়াইও এই সিরিজ। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে যে হারের রাস্তায় ছুটছেন মুশফিকরা, সেখান থেকে বেরোনোর চেষ্টার কমতি নেই টাইগারদের। পাল্টে ফেলা হয়েছে কোচিং স্টাফ। চাপ কমিয়ে শুধুমাত্র খেলায় মনোনিবেশ করতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে টেস্ট ও ওয়ানডে ফরম্যাটে দুই অধিনায়ক। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে যা প্রথম। বিসিবির নতুন সিদ্ধান্তের পর মুশফিকুর রহিম এখন শুধুই টেস্ট অধিনায়ক। তার অধিনায়কত্বে আফ্রিকান প্রতিনিধিদের বিপক্ষে যে দুটি সিরিজ খেলেছিল টাইগাররা, তাতে জয় নেই। তাই অধিনায়ক হিসেবে বাড়তি চাপ থাকছে মুশফিকের উপর। চাপ, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স- সবকিছুকে সঙ্গী করেই টাইগার অধিনায়কের চিন্তা চেতনায় এখন সাফল্যেয় ফেরা। এজন্য গত একমাস চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে ও হিথ স্ট্রিকের কোচিংয়ে নিজেদের প্রস্তুত করে নিয়েছেন মুশফিকরা। এখন শুধু বাস্তবায়নের অপেক্ষা। দুই দলের অলোচনার পুরোধায় র‌্যাঙ্কিং বিষয়টি থাকলেও টাইগার অধিনায়কের ভাবনায় শুধু জয়, ‘র‌্যাঙ্কিংয়ের বিষয় অবশ্যই থাকছে। তবে আমাদের ফোকাসড ম্যাচ জয়ে। এজন্য আমাদের প্রসেসগুলো ঠিক রাখছি। যদি প্রসেসগুলো ঠিক থাকে, তাহলে রেজাল্ট ও র‌্যাঙ্কিংও ঠিক থাকবে।’ কন্টিনেন্টাল কাপ চ্যাম্পিয়ন দলের বিপক্ষে খেলা এড়ানোর জন্য যেমন জয় প্রয়োজন, তেমনি একটি জয়ই সরিয়ে দিবে সেই অবস্থান থেকে। সিরিজটি জিতলেই জিম্বাবুয়েকে টপকে ৯ নম্বরে ওঠে আসবে বাংলাদেশ।
টেস্ট স্ট্যাটাস ২০০০ সালে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ খেলা ২০০১ সালে। এরপর ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই দেশ টেস্ট সিরিজ খেলেছে ৬টি। আফ্রিকান প্রতিনিধিদের চার জয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় একটি। তাও ২০০৫ সালে ঘরের মাটিতে। ওই সিরিজ জিতেছিল দুই বাঁ হাতি স্পিনারের ঘূর্ণিতে। এবারও টেলদের ধরাশায়ী করতে তিন স্পিনারদিয়ে সাজানো হচ্ছে একাদশ। নিষেধাজ্ঞার জন্য এক সিরিজ মিস করে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে আলো ছড়ানো তাইজুল ইসলাম। ৭১ নম্বর টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে জুবায়ের হোসেন লিখনের। জুবায়ের প্রথম লেগ স্পিনার বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট খেলবেন। তার অভিষেকের বিষয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘যেহেতু উইকেট স্পিন নির্ভর, তাই জুবায়েরের খেলার সম্ভাবনাও বেশি।’ জুবায়েরের অভিষেকে বোলিংয়ে যেমন বৈচিত্র্য আসবে, তেমনি এক সিরিজ মিস করা সাকিবের ফেরায় শক্তি বেড়েছে বলেই মানেন মুশফিক, ‘সাকিব দলের সেরা ক্রিকেটার। তার ফেরায় শুধু বোলিং নয়, ব্যাটিংয়ের গভীরতাও বেড়েছে।’
পরিসংখ্যানের বিচারে এগিয়ে জিম্বাবুয়ে। গত ১০ মাসের টাইগারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ সেই ভিতটাকে জোরালো করেছে ঠিকই। তারপরও বসুন্ধরা সিমেন্ট সিরিজে ফেভারিটের তকমাটা কিন্তু মুশফিকদের শরীরেই লেপ্টে থাকছে।
সম্ভাব্য একাদশ : তামিম ইকবাল, শামসুর রহমান শুভ, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ, শুভাগত হোম, জুবায়ের হোসেন লিখন, তাইজুল ইসলাম, আল-আমিন ও শাহাদাত হোসেন রাজিব।

সর্বশেষ খবর