জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগকে শিবির ও পুলিশি প্রতিরোধে বাইরে রেখেই শিবিরের উপস্থিতিতে বামপন্থি শিক্ষকদের সেমিনারে যোগ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
বামপন্থিদের শিক্ষক সংগঠনের এই সেমিনার নিয়ে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সেমিনার উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকেই ছিল উত্তেজনা। ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে দেড় ঘণ্টা দেরিতে বিকাল ৫টার দিকে শুরু হয় সেমিনার। ৩টার দিকে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে গেলে কলেজের প্রধান ফটকেই পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এর আগে ছাত্রলীগ কর্মীরা হোস্টেল গেট দিয়ে কলেজে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিবির বাধা দেয়। এ সময় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে ছাত্রশিবির কলেজের প্রধান ফটকে শিক্ষামন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের ব্যানার সাঁটে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে ফুলের তোড়া দিয়ে মন্ত্রীকে বরণ করে। শেষ পর্যন্ত বাধাস্থল কলেজের প্রধান ফটকেই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে স্মারকলিপি দেয় ছাত্রলীগ। এ সময় কলেজটির শিবির সভাপতি বহু মামলার আসামি রুকন উদ্দিনের নেতৃত্বে শিবিরের পৃথক গ্রুপ প্রশাসনিক ভবন, প্রধান ফটক অভ্যন্তর, অডিটরিয়াম অভ্যন্তর ও আশপাশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পোশাক পরে অবস্থান নেয়। ছাত্রলীগ কলেজ অভ্যন্তর ও সেমিনারস্থলে ঢুকতে না পারলেও শিবিরের প্রকাশ্য অবস্থানের বিষয়টি পুলিশের সংশ্লিষ্ট সার্কেলের এসিকে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আবু মোহাম্মদ আরিফ। এ বিষয়ে নিকটস্থ চকবাজার থানার ওসি আতিক আহমেদ চৌধুরী এক প্রশ্নের জবাবে জানান, কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার উপস্থিত ছাত্রদের ‘সাধারণ ছাত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করায় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কলেজটিতে নয় মাস ধরে কোনো অধ্যক্ষ নেই। বেশ কবছর ধরে নেই ছাত্র সংসদও। বামপন্থি শিক্ষকনেতাদের যোগসাজশে জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের দৌরাত্ম্য আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকরা অযাচিত বদলিসহ নানা হয়রানির শিকার- এমন পরিস্থিতি তুলে ধরে তা নিরসনে সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে ছাত্রলীগের স্মারকলিপিতে।
এতে বলা হয়- কলেজটি শিবিরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। অন্যদিকে কলেজটিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ডজনখানেক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও সইয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অনুষ্ঠানটির বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামও যোগ দেননি। উল্লেখ্য, বামপন্থিদের এ আয়োজনে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আমন্ত্রণ পাননি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ অতিরিক্ত পুলিশ ও জামায়াত-শিবিরের সহাবস্থানে সেমিনারটি শেষ হয়। এর আগে দিনভর ব্যস্ততম সফরে শিক্ষামন্ত্রী সরকারি সিটি কলেজ, মহিলা কলেজ এবং ইস্পাহানী স্কুল পরিদর্শন ও প্রবর্তক স্কুল অ্যান্ড কলেজের নতুন ভবন উদ্বোধনে যোগ দেন। পরিদর্শনকালে মন্ত্রী শিক্ষা বাজেট বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘সারা বিশ্বে যেখানে শিক্ষার বাজেট বাড়ছে, আমাদের কমতে শুরু করেছে।’