‘রুবেল আমাকে বাবা-মায়ের কসম কেটে বিয়ে করার কথা দিয়েছিল। অথচ এখন কী বলছে। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। অনেকে আমাকে খারাপ মেয়ে বলতে শুরু করেছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আগে পুরো ঘটনা জানুন, এরপর মন্তব্য করুন। সমাজে এ রকম অনেক ঘটনা ঘটে। হয়তো হাইপ্রোফাইল ছেলেদের জন্য কোনো মেয়ে সাহস করে এ রকম মামলা করেনি। আমি ভয় পাইনি। সাহস করেছি। জানিয়েছি প্রতিবাদ। এ ঘটনা থেকে অন্য মেয়েরাও শিখবে এটাই আমার প্রত্যাশা।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে কথাগুলো বলেন হালের আলোচিত ‘আনহ্যাপি’ ঘটনার নায়িকা হ্যাপী।
রুবেলের সঙ্গে প্রেমের ইতিহাস টানতে গিয়ে হ্যাপী বলেন, জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই আমাদের সম্পর্কের কথা জানতেন। এদের মধ্যে একজন বিশ্বসেরা ক্রিকেটারও প্রথম থেকে অবহিত ছিলেন আমাদের সম্পর্কে। এমনকি তিনি রুবেলকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যাতে শীঘ্রই আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। তিনি বলতেন, হ্যাপী তো ভালো মেয়ে। বিয়ে করলে প্রবলেমটা কোথায়? অথচ এসব ইতিহাসও রুবেলের কাছে এখন অচেনা মনে হচ্ছে।
‘পাবলিসিটির জন্য হ্যাপী এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন’-এমন প্রচারণার বিষয়ে হ্যাপী বলেন, দেখুন মিডিয়া থেকে অনেকটা দূরে সরে গিয়েছিলাম। ইচ্ছা করেই এ জগৎ থেকে পিছুটান দিয়েছি। মূলত ‘রিয়েল ম্যান’ ছবিতে অভিনয়ের পর পরই এ জগৎকে টা টা জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাহলে নতুন করে পাবলিসিটিতে নামব কেন?
রুবেল সবার সামনে আমাকে বিয়ে করবে বলে কথা দিল। সেদিন রুবেল আমার সঙ্গে বেশ ভালো ব্যবহার করল। আমাকে তার বাসায় নিয়ে গেল। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে সে আমার মোবাইল ফোনটা নিয়ে নেয়। মোবাইলে রুবেলের যা কিছু ছিল তার সবই ডিলিট করে দেয়। এর পরই ওর চেহারা পাল্টে যায়। সে আমাকে বলে, যাও সব প্রমাণ মুছে দিলাম, এবার গিয়ে মামলা করো। কিন্তু সে জানে না আমার কাছে আরও কিছু রয়েছে। রুবেলের জার্সি ও হ্যালমেট পরিহিত আমার অনেকগুলো ছবি রয়েছে। রয়েছে আরও কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি। সবচেয়ে বড় প্রমাণ রুবেল কিন্তু আমাকে পুরোপুরি অস্বীকার করেনি।
এখন আপনি কী করবেন জানতে চাইলে হ্যাপী বলেন, তাকে তো আর কখনোই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেব না। মামলা নিজস্ব গতিতে চলবে। ওর শাস্তিই আমার কাম্য। কখনো মনে আসেনি রুবেল আমাকে ছুড়ে ফেলে দেবে। মূলত ওর বাসায় কেউ থাকত না। সে একাই থাকত। আমার মা-বাবাকে শুটিংয়ের কথা বলে প্রায়ই রুবেলের বাসায় যেতাম। রাতের পর রাত থেকেছি। উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর বিকালে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। এরপর হ্যাপীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়। ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে মিরপুর থানায় নিয়ে তাকে মামলা-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাসায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে রুবেল হোসেন হাইকোর্টে জামিন নিতে যান এবং চার সপ্তাহের আগাম জামিন পান।