মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

৩ ও ৫ জানুয়ারি জনসভার অনুমতি চেয়েছে বিএনপি

আগামী ৩ ও ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে জনসভা করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আবেদন করেছে বিএনপি। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, নয়াপল্টন ও শাপলা চত্বরের যে কোনো একটি স্থানে জনসভা করতে চায় দলটি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি ও ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে এই আবেদন করা হয়।
জানা যায়, গতকাল বিকালে ডিএমপি এবং পিডব্লিউডির কাছে বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আসাদুল করীম শাহীন স্বাক্ষরে এ আবেদন করা হয়। রাজধানীতে জনসভা করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং মতিঝিল শাপলা চত্বর বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এর যে কোনো একটিতে জনসভা করতে চায় দলটি।
এদিকে জনসভা সফল করতে গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০ দল ঢাকা মহানগর নেতাদের এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস, প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আউয়াল মিন্টু, সদস্য সচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলসহ ২০ দলের মহানগর নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ৩ ও ৫ জানুয়ারি জনসভার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
জানা গেছে, ৩ জানুয়ারির জনসভা মহানগর ২০ দল এবং ৫ জানুয়ারির জনসভা কেন্দ্রীয় ২০ দলের পক্ষ থেকে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জনসভা সফল করতে প্রত্যেকটি দলের পৃথকভাবে মহানগরের ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জনসভা সফল করতে ‘চেইন অব কমান্ড’ বজায় রাখতেও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। জনসভা করতে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে মহানগর ২০ দলের কমিটিও গঠন করা হয় বলে জানা গেছে। এদিকে পুলিশি বাধায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করতে পারেনি জোটের বাংলাদেশ জাতীয় দল। একইভাবে নয়াপল্টনে মওলানা ভাসানী মিলনায়তনে বিএনপির দুটি কর্মিসভা পণ্ড হয়ে যায়। সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ জাতীয় দল’ আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি পণ্ড করে দেয় পুলিশ। এতে অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনপিপি’র চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, ডিএলএ’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান সাংবাদিকদের জানান, হামলা-মামলা ও পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালিয়ে জালিম সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। আমরা বাকশালের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। তবে শেষ বিচারে অবশ্যই জনগণের বিজয় হবে। এ ছাড়া বিকালে নয়াপল্টনে মওলানা ভাসানী মিলনায়তনে এক কর্মিসভাও পণ্ড হয়ে যায়। সভা চলাকালে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে নেতা-কর্মীদের বের করে দেয়।
কমিটি গঠন নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ : নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও যুবদলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। লালবাগ থানা বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষে এই সংঘর্ষ হয়।
বিএনপি সূত্র জানায়, লালবাগ থানা বিএনপির কমিটি গঠন উপলক্ষে নিজেদের জানান দিতে সকালে লালবাগ থানা বিএনপি ও যুবদলের দুটি গ্রুপ নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোডাউন করতে আসে। একটি গ্রুপ কারাবন্দী বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর ও অপর গ্রুপ সাবেক কাউন্সিলর মীর আলী আজমের সমর্থক। এই দুই গ্রুপ কার্যালয়ের সামনে পৃথক পৃথক স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এরপরেই শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। থেমে থেমে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উপস্থিত পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। পল্টন থানার অপারেশন অফিসার এসআই গোলাম সরওয়ার বলেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে তাদের কয়জন আহত হয়েছে তা জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর