বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

মিথ্যাচারের সমালোচনা করলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী

মিথ্যাচারের সমালোচনা করলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী

এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনে শুনানি হবে আগামী ৫ এপ্রিল। সব কিছু বিবেচনা করে গতকাল প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ তারিখ নির্ধারণ করেন। তবে চার সপ্তাহের মুলতবি আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। শুনানিতে কামারুজ্জামানের আইনজীবীর মিথ্যাচারের কড়া সমালোচনা করেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। গতকাল এই মামলার শুনানি ধরা হলে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন আদালতে বলেন, ‘আমরা চার সপ্তাহের সময় চাচ্ছি। কারণ আসামি পক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন অসুস্থ এবং হাসপাতালে।’ এ সময় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা জিজ্ঞাস করেন তিনি কি হাসপাতালে? জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এখন বেরিয়ে গেছেন।’ তখন মুহূর্তে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘আপনারা সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে তামাশা করছেন। এত বড় একটা মিথ্যা কথা কীভাবে বললেন? আমি নিজে গত মঙ্গলবার তাকে একাত্তর টিভিতে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করতে দেখেছি। তারপরে কীভাবে বলেন তিনি হাসপাতালে ছিলেন? আপনারা চরম মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে এ আদালতের সঙ্গে প্রতারণা এবং তামাশা করছেন? এটা নির্লজ্জতা। এ ধরনের মিথ্যাচার কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না এবং পৃথিবীর কোনো দেশেই অ্যাডভোকেটের ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে মামলা মুলতবি হতে পারে না। আসল কথা এ মামলা শেষ করার ইচ্ছা আপনাদের নেই।’ এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘মাত্র দুই দিন আগে খন্দকার মাহবুব হোসেন আইনজীবী সমিতির একটি সভায় সভাপতিত্ব করেছেন। তাদের আসল উদ্দেশ্য মামলা দীর্ঘায়িত করা।’ সব কিছু শোনার পরে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তাদের চার সপ্তাহের মুলতবির আবেদন অগ্রাহ্য করে আগামী ৫ এপ্রিল মামলার দিন ধার্য করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামে ১২০ জন পুরুষকে হত্যার দায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। এর আগে আলবদর বাহিনীর ময়মনসিংহ অঞ্চল প্রধান কামারুজ্জামানকে ২০১৩ সালের ৯ মে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামি পক্ষ আপিল করে। আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন কামারুজ্জামান।

সর্বশেষ খবর