নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর  হোসেনের অন্যতম সহযোগী আবুল বাশার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম চাঁদনী রূপমের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দি শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ  গোলাকান্দাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ। আবুল বাশার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক। সূত্র জানায়, আবুল বাশার অপহরণ থেকে শুরু করে ৭ জনের লাশ ট্রলারে উঠানোর সময় পর্যন্ত নূর হোসেনের পাহারাদার হিসেবে নিয়োজিত ছিল। সে নূর হোসেনের চাঁদাবাজির সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করত। একই সঙ্গে নূর হোসেনের অপরাধ সাম্রাজ্যের টাকার ভাগ র‌্যাবের কর্মকর্তা মেজর আরিফের কাছে পৌঁছে দিত। নূর হোসেনের হয়ে র‌্যাবের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে টাকার লেনদেন করত এই বাশার।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান আবুল বাশারের জবানবন্দি দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ৭ খুনের ঘটনায় অতীতে দেওয়া আসামিরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নূর হোসেনের সহযোগী বাশারের প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা বলেছেন। বাশার নিজেও সাত খুনের ঘটনায় করা দুটি মামলায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন অপহৃত হন। আর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠা ছয়জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ১ মে আরও একজনের লাশ পাওয়া যায় নদীতে। অপহরণের পরপরই নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর  হোসেনকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সাত খুনের দুটি মামলায় এ পর্যন্ত র‌্যাবের ১৯ জন সদস্যসহ মোট ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিন র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ১৯ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া গ্রেফতারকৃত নূর হোসেনের সহযোগীরাও জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়াও ঘটনার সাক্ষী হিসেবে ইতিমধ্যে ১৬ জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।