মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

খোকনের তারুণ্য নাকি আব্বাসের ফিরে আসা

খোকনের তারুণ্য নাকি আব্বাসের ফিরে আসা

‘পরিকল্পিত উন্নয়ন, সুযোগের সমতা, নিরাপদ ও দূষণমুক্ত আধুনিক ঢাকা’র স্বপ্নধারী তারুণ্যমুখর সাঈদ খোকন নাকি ‘নিরাপদ ঢাকা চাই, পরিচ্ছন্ন ঢাকা চাই’ স্লোগান নিয়ে ফেরার অপেক্ষায় থাকা মির্জা আব্বাস? কে হচ্ছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র? নগর পিতা হিসেবে কাকে বেছে নেবেন দক্ষিণের ভোটাররা? এমন বহু প্রশ্নের জবাব মিলবে আজ। ভোটযুদ্ধে মুখোমুখি অবস্থান নেওয়া তারুণ্যের প্রতীক সাঈদ খোকন ও মির্জা আব্বাসের মধ্য থেকে নগরবাসী বেছে নেবেন তাদের কাক্সিক্ষত সেই নগর পিতাকে।
১৯৯৪ সালে ঢাকার মেয়র নির্বাচনে সাঈদ খোকনের বাবা মোহাম্মদ হানিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন মাছ প্রতীক নিয়ে। সে সময় হেরেছিলেন মির্জা আব্বাস। এবার প্রার্থী মরহুম মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন। তিনিও লড়ছেন মাছ (ইলিশ) প্রতীক নিয়ে। প্রতিপক্ষ আবার সেই মির্জা আব্বাস। বাবার কাছে পরাজিত মির্জা আব্বাস এবার ছেলের সঙ্গে জয়ী হবেন, নাকি সেই পরাজয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটবে- এ নিয়েও কৌতূহলের শেষ নেই। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ভোটারদের রায়েই নির্ধারিত হবে সিটি দক্ষিণের দুই সম্ভাবনাময় প্রার্থীর ভাগ্য। সাঈদ খোকন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আর মির্জা আব্বাস বিএনপির। বয়সের বিবেচনায় বলা চলে নবীন-প্রবীণের লড়াই। তারুণ্যের জয় হবে নাকি মেয়রের সেই মর্যাদার চেয়ারটিতে আবার বসার সুযোগ পাবেন মির্জা আব্বাস? ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের প্রায় ১৯ লাখ ভোটারের মধ্যে আজ এই একটিই প্রশ্ন। নগরবাসীর মধ্যেও তীব্র কৌতূহল। বিজয়ের চূড়ান্ত হাসি হাসবেন কে? প্রতীক্ষার অবসান হবে আজ ভোট গণনার শেষে। নগরবাসী মনে করছে ঢাকা দক্ষিণের নির্বাচনে সাঈদ খোকন ও মির্জা আব্বাসের মধ্যে তীব্র লড়াই হতে পারে। রাজনৈতিক বিবেচনায় দুজনই বড় দলের প্রার্থী। দুই প্রার্থীর পক্ষেই মাঠ চষে বেড়িয়েছেন তাদের সমর্থকরা। সাঈদ খোকনের পারিবারিক ঐতিহ্য ঢাকাবাসীর সবার জানা। তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছেন ঢাকাকে আধুনিক নগরীতে পরিণত করার। রাজধানীকে দূষণমুক্ত; নাব্য ও নিরাপদ বুড়িগঙ্গা; পানি-গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান; পরিচ্ছন্ন, দূষণমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর মহানগরী; দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও নাগরিকদের নিরাপদ জীবন গড়ে তোলার নানা স্বপ্ন দেখিয়েছেন। অন্যদিকে সাবেক মেয়র হিসেবে মির্জা আব্বাসও ভোটারদের কাছে পরিচিত মুখ। তিনি বিশ্বায়ন উপযোগী নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন নগরবাসীর কাছে। ঢাকা শহরের হোল্ডিং ট্যাক্স কমানো, নাগরিকদের জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক অভিযোগ কেন্দ্র, যানজট নিরসনে কমিউনিটি পুলিশ ব্যবহারসহ ঢাকাকে একটি পরিকল্পিত মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন তিনি। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা; নাগরিক বিনোদন; শিক্ষা খাত; পরিবেশ উন্নয়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; প্রযুক্তির ঢাকা; সমাজসেবা; জননিরাপত্তা; নগর পরিকল্পনা ও প্রশাসনসহ আদর্শ ও বিশ্বায়ন উপযোগী ঢাকা গড়ারও অঙ্গীকার করেছেন বিএনপি সমর্থিত এই প্রার্থী। জানা গেছে, ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফের ছেলে হিসেবে বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষের কাছে সাঈদ খোকনের রয়েছে আলাদা কদর। ঢাকা দক্ষিণে জয়ের জন্য পুরান ঢাকার ভোট বড় ফ্যাক্টর। পুরান ঢাকায়ই বেড়ে উঠেছেন সাঈদ খোকন। তবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় খোকনের প্রতি নতুন ভোটারদের যে সাড়া দেখা গেছে তা অবশ্যই এই তরুণ প্রার্থীর জন্য আশাব্যঞ্জক। অন্যদিকে মির্জা আব্বাসকে আত্মগোপনেই শেষ পর্যন্ত থাকতে হয়েছে। তিনি প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাতে পারেননি। তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস প্রচারণা চালিয়েছেন। চষে বেড়িয়েছেন অলিগলি, রাজপথ। সব দিক বিবেচনায় এনে নগরবাসী তাদের নগর পিতাকে আজ বেছে নিতে চাচ্ছেন। আর কে হচ্ছেন সেই কাক্সিক্ষত নগর পিতা- তা জানতে সবাইকে অপেক্ষায় থাকতে হবে ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত।

সর্বশেষ খবর