মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধমুক্ত মেগাসিটি নাছিরের পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম মনজুরের

জলাবদ্ধমুক্ত মেগাসিটি নাছিরের পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম মনজুরের

জলাবদ্ধতামুক্ত ‘স্বপ্নের মেগাসিটি’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট যুদ্ধে নামছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন। অন্যদিকে পরিচ্ছন্ন সুন্দর আলোকিত ও সন্ত্রাসমুক্ত আধুনিক উন্নত চট্টগ্রাম গড়ার প্রত্যয়ে নির্বাচনী মাঠে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলম। একইভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে অন্য ১০ প্রার্থীও নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোট যুদ্ধে থাকছেন। চসিকের সেই প্রতীক্ষিত নির্বাচন আজ। তবে মেয়র প্রার্থী সংখ্যায় ১২ জন হলেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে মূলত আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমর্থিত দুই প্রার্থীর মধ্যে। ইতিমধ্যে দুই পক্ষই আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন জয়ের প্রত্যাশায়। হাতি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আ জ ম নাছির উদ্দিন আর কমলালেবু প্রতীক নিয়ে ভোট যুদ্ধে সদ্য বিদায়ী মেয়র মনজুর আলম।
জানা যায়, অন্যান্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন, জাতীয় পার্টি সমর্থিত সোলায়মান আলম শেঠ, বিএনএফের অধ্যাপক আরিফ মঈনুদ্দিন, ইসলামিক ফ্রন্টের মুজিবুল হক শুক্কুর, ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, ইসলামী আন্দোলনের ওয়ারেজ হোসেন ভূইয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আবুল কালাম আজাদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ জোহা, সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি ও শফিউল আলম। তবে এদের মধ্যে কেউ কেউ প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ‘ছায়া প্রার্থী’ হিসেবে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। তাছাড়া চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে দুই হেভিওয়েটের বাইরে অন্যদের নিয়ে ভোটারদের মধ্যে তেমন উৎসাহ না থাকলেও প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তারা নির্ঘুম প্রচারণায় ছিলেন।
জানা যায়, নাগরিক কমিটির মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির ৩৬ দফা ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলম ৫৪ দফা প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ভোট যুদ্ধে নামেন। দুই প্রার্থীই নির্বাচনী ইশতেহারে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গটিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।  প্রতিশ্রুতিতে আ জ ম নাছির বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পিত পদক্ষেপে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে এই নগরের উন্নয়ন ঘটবে, এখানকার মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না। এই শহরকে বিশ্বমানের নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কোনো কাজ নয়। দরকার কেবল সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সদিচ্ছার। আমি রায় পেলে নগরবাসীর আস্থার মূল্য দিতে সক্ষম হব। সেবা ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেব। ওয়ার্ডবাসীর চাহিদা ও মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। শুধু আশ্বাসের ফুলঝুরি নয়, বাস্তবিক কর্ম পরিকল্পনা দিয়ে নগরবাসীর আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন ঘটাতে চাই। সব দফার রফা ঘটাতে চাই।’ ইশতেহারে মোহাম্মদ মনজুর আলম বলেন, ‘উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর শুরু আছে, সমাপ্তি নেই। তবে অপরিকল্পিত ও অসমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়। তেমনই সম্পদের সীমাবদ্ধতা ও কার্যক্রমের আইনগত পরিসীমা সম্পর্কে অজ্ঞতা কোনো কোনো মানুষকে ‘স্বপ্নবিলাসী’ হতে প্রলুব্ধ করে। এরা নিজেরা অজ্ঞাতবশত স্বপ্নের রঙিন ফানুস তৈরি করেন, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকেও বিভ্রান্ত করেন। তাই যে কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনার ত্রুটিহীনতা, বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক অভিজ্ঞতা, লক্ষ্যে পৌঁছানোর তীব্র আকাক্সক্ষা, ব্যক্তিগত সততা ও দুর্নীতিমুক্ত মানসিকতা প্রয়োজন।’ জাতীয় পার্টির সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিচ্ছন্ন নগর প্রতিষ্ঠাই আমার মূল লক্ষ্য। তাছাড়া আগামীতে প্রকৃত অর্থেই চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানীতে রূপান্তর করব।’ ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মুজিবুল হক শুক্কুর বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগরকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য ‘গ্রিনসিটিতে’ রূপান্তর, জলাবদ্ধতা-যানজট নিরসনকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৩১ দফার নির্বাচনী ইশতেহার আমি ঘোষণা করি। তাছাড়া এই চট্টগ্রাম প্রাকৃতিকভাবে নয়নাভিরাম, বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, প্রধান সামুদ্রিক বন্দর, প্রধান ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পকেন্দ্র। তারপরও এর চাহিদানুযায়ী উন্নয়ন হয়নি।”
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এম এ মতিন বলেন, ‘বাসযোগ্য চট্টগ্রাম প্রতিষ্ঠাই আমার স্বপ্ন। তাছাড়া জলাবদ্ধতামুক্ত ও যানজট নিরসন, সড়ক বাতি লাগানোসহ নগরীর সামগ্রিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন করাই আমার লক্ষ্য।’

সর্বশেষ খবর