বুধবার, ৬ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

ভারতীয় সংসদে পাস হতে চলেছে স্থলসীমান্ত বিল

ভারতীয় সংসদে পাস হতে চলেছে স্থলসীমান্ত বিল

দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তিসংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল গতকাল ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক শলাপরামর্শ এবং কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়ার পর আজ রাজ্যসভায় পাস হতে চলেছে বিলটি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল লোকসভায় উঠবে। সেখানে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন পেলেই পাস হয়ে যাবে বিল। সংশোধন হবে ভারতের সংবিধান। কংগ্রেসের দাবি মেনে চুক্তিতে আসামকে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে এই বিলে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পাওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, চুক্তিটি নিয়ে জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফর করবেন। তিস্তা ও স্থলসীমান্ত- এ দুটি চুক্তি নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক টানটান হয়ে রয়েছে গত দুই বছর। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে ঝুলে রয়েছে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি। কিন্তু খোদ মমতাই বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে বলে এসেছেন, সীমান্ত চুক্তিটি যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত হয়, তার জন্য সব রকম সহযোগিতা করবেন তিনি। কিন্তু আসাম বিজেপির একটি বিরাট চাপ তৈরি হয় কেন্দ্রের ওপর। রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, এ চুক্তি রূপায়িত হলে আসামের মানুষের কাছে ভুল সংকেত যাবে। বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তিটি চলতি অধিবেশনে সম্পন্ন করতে এতটাই বদ্ধপরিকর ছিল সরকার যে, শেষ পর্যন্ত স্থির হয়েছিল, আসামকে বাদ দিয়েই তা সেরে ফেলা হবে। আসাম বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন এবং সেই রাজ্যের বিজেপি শাখার প্রবল আপত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেন মোদি-অমিত শাহেরা। কিন্তু বেঁকে বসে কংগ্রেস। আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ চুক্তিতে আসামকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন। কংগ্রেসও জানিয়ে দেয় আসামকে বাদ দিয়ে স্থলসীমান্ত চুক্তিটি রাজ্যসভায় আনলে তারা সমর্থন করবে না। সে ক্ষেত্রে কার্যত আটকে যাবে বিলের ভবিষ্যৎ। এরপর আসাম বিজেপির সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যকে ডেকে পাঠানো হয় দিল্লি। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ এবং সুষমা স্বরাজ দীর্ঘ বৈঠকে বসেন তার সঙ্গে। বোঝানো হয় কংগ্রেসের বিরোধিতাকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগিয়ে এ বিলটিতে আসামকে রাখা হবে।
অর্থাৎ সাপ মরবে অথচ লাঠিও ভাঙবে না- এমনই এক মধ্যমপথ খুঁজছিল কেন্দ্র। তারা একদিকে যেমন চাইছে যত দ্রুত সম্ভব স্থলসীমান্ত চুক্তিটি সম্পন্ন করে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে, অন্যদিকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে আসাম বিজেপিকেও বিপাকে ফেলতে চাওয়া হয়নি। কংগ্রেস আপত্তি করায় কেন্দ্র একটি সুযোগ পেয়ে গেল। সোমবার অমিত শাহ সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যকে বলেন, আসামে সাধারণ মানুষের কাছে এটাই প্রচার করতে হবে, মূলত কংগ্রেসের বিরোধিতায় আসামকে চুক্তির অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হলো কেন্দ্র।

 

সর্বশেষ খবর