শুক্রবার, ৮ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতে সীমান্ত বিল পাস হওয়ার ঘটনা তার সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য। বিলটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের জন্য এটা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ল্যান্ড বাউন্ডারি আর সমুদ্রসীমা নিয়ে ’৭৫-পরবর্তী কোনো সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শুধু গালি দিয়ে গেছে। গতকাল সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, সীমান্ত চুক্তির মধ্য দিয়ে যে ভূখণ্ড পাওয়া যাবে তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর প্রধানদের প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে রাখবেন, আপনাদের ওপর বড় দায়িত্ব চলে আসছে।
তিনি প্রসঙ্গক্রমে বলেন, দেশে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে জন্য ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে জঙ্গিবাদ যেন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। তিনি বর্তমান মেয়াদে দ্বিতীয়বারের মতো এ মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করলেন। সীমান্ত বিল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংবিধানে প্রথম সংশোধন করে কিন্তু এই বিল আনা হয়েছিল এই চুক্তির জন্য। সে সময় অনেক কথা শুনতে হয়েছে। দেশ বেচার চুক্তি, অমুক-সমুক, নানা কথা। তখন কীভাবে অপপ্রচার করা হয়েছিল অনেকে তা জানেই না। অনেকের তখন জন্মই হয়নি। অনেকে ছোট ছিল। শেখ হাসিনা বলেন, বিলটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের জন্য এটা প্রয়োজন ছিল। ’৭৫-পরবর্তী কোনো সরকারই অমীমাংসিত এ বিষয়টির সমাধানে উদ্যোগ নেয়নি। তিনি বলেন, যখন পার্টিশন হলো ১৯৪৭ সালে, তখন থেকে ওই সমস্যার সমাধান হয়নি। স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু ইনিশিয়েটিভ নিলেন। তিনি কাজ করে গেলেন। কিন্তু পঁচাত্তরের পর থেকে কোনো সরকার কোনো রকম উদ্যোগই নেয়নি- এটা হলো বাস্তবতা। তিনি বলেন, ল্যান্ড বাউন্ডারি আর সমুদ্রসীমা নিয়ে কোনো সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শুধু গালি দিয়ে গেছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ফেনীতে সাড়ে ছয় কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিতকরণের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০০৯ সালে ফের ক্ষমতায় আসার পর সেটা সমাধান হয়েছে। আমাদের ওই জায়গাটা আমরা পেয়ে গেলাম। ফেনীতে বিএনপি নেত্রীর (খালেদা জিয়া) কন্সটিটুয়েন্সিতে বেশ কিছু জায়গা আমরা ভারতের কাছ থেকে আদায় করে দিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করা। এই জঙ্গিবাদ দুই ধরনের হয়ে গেছে। একটা প্রফেশনাল জঙ্গি, আরেকটা হলো বিএনপি-জামায়াত জোটের ২০-দলীয় জঙ্গি। বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় আপনারা সফল হয়েছেন। দীর্ঘদিন জ্বালাও-পোড়াও করেও তারা কিছুই করতে পারেনি। শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে যারা এ ধরনের কাজের সঙ্গে লিপ্ত তাদের আইনের আওতায় আনতেই হবে, শাস্তির বিধান করতেই হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।
প্রধানমন্ত্রী সিরাজগঞ্জ যাচ্ছেন আজ : সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে আজ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্প্রসারিত কার্যক্রম, সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ও শেখ রাসেল পৌর শিশু পার্কসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। পরে তিনি রবীন্দ্র ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শাহজাদপুর সরকারি কলেজ মাঠে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে নতুন রূপে সেজেছে শাহজাদপুর।

সর্বশেষ খবর