বুধবার, ২৭ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

মোদি আসছেন ৬ জুন সফরসূচি চূড়ান্ত

মোদি আসছেন ৬ জুন সফরসূচি চূড়ান্ত

আগামী ৬ জুন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। প্রায় এক বছর ধরে তার ঢাকা সফর নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গতকাল সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ও ভারত। দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৬ ও ৭ জুন নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফর করবেন বলে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসছেন। ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি ৬ ও ৭ জুন বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরে আসছেন। এটাই নরেন্দ্র মোদির প্রথম বাংলাদেশ সফর। এ সফরে দুই দেশের চমৎকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সফরকালে দুই প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে। সফরকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। নয়া দিল্লির পররাষ্ট্র দফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৬ ও ৭ জুন রাষ্ট্রীয় সফরের উল্লেখ করে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বের প্রতিফলন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর। এ সফরে দুই দেশের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা, বন্ধুত্বের সম্পর্ক ও আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলোর তথ্যানুসারে, গত বছর ১৮ মে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোনে নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছার পাশাপাশি ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন মহান বন্ধুকে একটি অসাধারণ বন্ধু দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সফরে দেখতে খুবই আনন্দিত হব’। এর এক সপ্তাহ পর ২৬ মে ভারতের ১৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদি। সেদিন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু জাপান সফরের কারণে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পিকারকে দিয়েই পাঠানো হয় চিঠি ও ঢাকা সফরের আমন্ত্রণপত্র। মোদিও প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে বাংলাদেশকেই রাখতে আগ্রহী ছিলেন। গত ইউপিএ জোট সরকারের আমলে শিখরে ওঠা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের আড়ালে সৃষ্ট বাস্তবতার কারণে তা আর হয়নি। স্থলসীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থন ও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সে ধরনের দুটি বাস্তবতা। তখন মোদির উপদেষ্টারা মত দেন, সর্বোচ্চ সহযোগিতায় থাকা দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত এ দুই ইস্যুর সমাধানের বাইরে সফরকে বিশেষ ফলপ্রসূ বলা যাবে না। তাই সিদ্ধান্ত হয় অন্তত সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধন শেষে চুক্তি বাস্তবায়ন চূড়ান্ত করে ঢাকায় যাওয়ার। এখন স্থলসীমান্ত চুক্তির সব বাধা দূর করেই ঢাকা আসছেন তিনি। এক বছরে ঢাকা সফর না হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হয়েছে দুই দফা, টেলিফোনে কথা হয়েছে কয়েক দফা। অল্প সময়ে তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে সুসম্পর্কও। এর মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে নয়া দিল্লি সফরে গিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র দিয়ে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে বৈঠক হয় হাসিনা-মোদির। পরে ২৬ নভেম্বর নেপালে কাঠমান্ডু সার্ক সামিটের সাইডলাইনে আরেক দফায় হয় হাসিনা-মোদি বৈঠক। সর্বশেষ সীমান্ত বিল ভারতের লোকসভায় পাসের পর দুই নেতা টেলিফোনে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রানুসারে, নরেন্দ্র মোদির সফরের পুরোমাত্রা প্রস্তুতি চলছে। কথাবার্তা চলছে দশটির বেশি চুক্তি স্বাক্ষরের। ইতিমধ্যে চূড়ান্তও হয়েছে আধা ডজন। বাকিগুলোও দু-এক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে। অবশ্য শেষ সময় পর্যন্ত চলবে কথাবার্তা। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ঘোষণা আসবে ঢাকাতেই। তবে তিস্তা চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো আছে জল্পনা-কল্পনা।
খুব শিগগিরই তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি -রাজনাথ সিং : তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি সম্পন্ন করতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন চাইল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (এনডিএ) সরকারের এক বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে গতকাল কলকাতার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে খুব শিগগিরই তিস্তা চুক্তি সেরে ফেলতে চাই। আশা করব পশ্চিমবঙ্গ সরকার আমাদের এ ইস্যুতে পূর্ণ সহযোগিতা করবে।’

সর্বশেষ খবর