বুধবার, ২৭ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিএনপির প্রতিবাদ ও আমাদের বক্তব্য

‘বাংলাদেশ প্রতিদিনকে একান্ত সাক্ষাৎকার- বন্দীদশার রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন সালাহউদ্দিন’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৫ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন। সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদের বরাত দিয়ে তিনি সাক্ষাৎকারটি ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন।
প্রতিবাদলিপিতে তিনি বলেন- শিলংয়ের নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল সায়েন্স (নেগ্রিমস) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সালাহউদ্দিন আহমেদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা এবং ওই দেশের আইন ও হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী তার কোনো সাক্ষাৎকার দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি এ ধরনের সাক্ষাৎকার দেননি। পুলিশ বাজারে হাসিনা আহমেদের কেনাকাটা করতে যাওয়া ও প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার বিষয়টিও ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেন তিনি। সালাহউদ্দিনের ভাতিজার মুঠোফোনে সাক্ষাৎকারটির কোনো বাস্তবভিত্তি নেই বলে দাবি করেন রিপন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য : গত ২৪ মে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাফওয়ানুল করিমের মুঠোফোনে প্রতিবেদক শিলংয়ে ব্যবহৃত তার ফোন থেকে কল দেন। এ সময় সাফওয়ানুল করিম তার চাচা সালাহউদ্দিনের পাশে ছিলেন। সালাহউদ্দিনের সঙ্গে এক মিনিট কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি সালাহউদ্দিনকে ফোন দেন। এরপর সালাহউদ্দিন স্বেচ্ছায় প্রায় ১৫ মিনিট কথা বলেন। ঢাকায় বসে ড. আসাদুজ্জামান রিপন বা ওই সময় হাসপাতালের বাইরে থাকা হাসিনা আহমেদ মুঠোফোনের সাক্ষাৎকারটির ব্যাপারে কিছু জানার কথা নয়। সাক্ষাৎকারের বিষয়টি কেবল বলতে পারেন সালাহউদ্দিন বা তার ভাতিজা সাফওয়ানুল করিম। ২৫ মে নেগ্রিমস হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবেদককে পেয়ে সাফওয়ানুল করিম সাক্ষাৎকারের প্রশংসাও করেন। তবে তার নাম ছাপা হওয়ায় তিনি চাপে রয়েছেন বলেও বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান।
প্রতিবাদলিপিতে হাসপাতালে ফোনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই দাবি করলেও সালাহউদ্দিন প্রতিদিনই তার স্ত্রী ও ভাতিজার ফোনে কথা বলতেন। হাসপাতালের জানালা দিয়ে সে দৃশ্য বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অনেক সাংবাদিকও দেখেছেন। এ ছাড়া হাসিনা আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। ওই দিন পুলিশ বাজারস্থ হোটেল সেন্টার পয়েন্ট থেকে বের হওয়ার সময় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা হয়। তার সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কথা হয় প্রতিবেদকের। এ সময় হাসিনার সঙ্গে ছিলেন জাপান বিএনপি নেতা রবিন। সালাহউদ্দিনের নিকটাÍীয় মাহবুব চৌধুরী ও জাপান নেতা রবিনের উপস্থিতিতে হাসিনা কেনাকাটা করতে যাওয়া কথাটি বলেছেন।
প্রতিবাদ পাঠানোর পর ফের সংবাদ সম্মেলন : এদিকে প্রতিবাদ পাঠানোর একদিন পর গতকাল বিকালে এ নিয়ে ফের সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজামান রিপন। তিনি বলেন, ভারতের শিলংয়ে হাসপাতালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রয়েছেন। সেখান থেকে কোনো গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়া সম্ভব নয়। সালাহউদ্দিনকে উদ্ধৃতি করে যেসব একান্ত বক্তব্য হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছে কার্যত এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার (সালাহউদ্দিন আহমেদ) কথোপকথনের যে বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে, তাও সঠিক নয়। বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় নিয়ে আসাদুজ্জামান রিপন ছাড়াও এ নিয়ে কথা বলেন শিলং থেকে দেশে আসা দলের সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি। জনি বলেন, সেখানে সালাহউদ্দিনকে যে হাসপাতালে রেখে বর্তমানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তা সাত রাজ্যের মধ্যে সেরা সরকারি হাসপাতাল। হাইসিকিউরিটি (সর্বোচ্চ নিরাপত্তা) আর সেখানকার আইন অনুযায়ী কোনো ধরনের সাক্ষাৎকার দেওয়ার সুযোগ নেই। সালাহউদ্দিন আহমেদ শারীরিকভাবে অসুস্থ আছেন জানিয়ে জনি বলেন, তার সর্বশেষ চিকিৎসার খবর কি তা বলা যাচ্ছে না। কারণ সেখানকার চিকিৎসক এ ব্যাপারে কিছুই জানাননি। এমনকি তার (সালাহউদ্দিন আহমেদ) স্ত্রীকেও কিছু জানানো হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর