প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর এই প্রথমবার ঢাকা সফরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। এক বছরের শাসনকালে ১৮টি দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি। ইচ্ছা থাকলেও ঢাকা সফরটা হয়ে উঠেনি তার। তবে শারীরিকভাবে না যেতে পারলেও মানসিকভাবে যে সেখানে পৌঁছে গেছেন- তা মোদি জমানার বিভিন্ন কাজকর্মেই পরিলক্ষিত হয়েছে। তার শাসনামলে ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কে চোখে পড়ার মতো যে গতি এসেছে তা অস্বীকার করতে পারছেন না কূটনৈতিকবোদ্ধারা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তার প্রথম সফর হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ঢাকাকে। অন্যদিকে শীর্ষ পর্যায়ের সফর না হলেও বাংলাদেশ থেকে ধারাবাহিকভাবে স্পিকার ও মন্ত্রীরা এসেছেন নয়াদিল্লিতে। আঞ্চলিক সহযোগিতা, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে অনেক কাজ এগিয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মোদি মসৃণভাবে স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল পাস করিয়ে নিতে পেরেছেন সংসদের দুটি কক্ষ থেকেই। স্থলসীমান্ত চুক্তি পাস হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে যে ইতিবাচক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে তাকে ভিত্তি করে আসন্ন সফরকে পুরোপুরি সফল করতে চাচ্ছেন মোদি। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী নীতির কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশ’।
অন্যদিকে এ সফরের আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদির সফরসঙ্গী হবেন। রাজনৈতিকভাবে মমতা স্থলসীমান্ত চুক্তি পাসের কৃতিত্ব নিজেই নিতে চাইবেন- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মমতা এটা ভালো করেই জানেন যে, এবারের সফরে তাকে বাংলাদেশের সর্বস্তরের নেতৃত্বে এবং সাধারণ মানুষের সামনে তিস্তার দাবির মুখে পড়তে হতে পারে। গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফরকালে তিস্তার দাবিকে পাস কাটিয়ে গেছেন স্থলসীমান্ত চুক্তিকে সামনে রেখে। সে সময় স্থলসীমান্ত চুক্তি প্রসঙ্গ টেনে তিস্তাকে এড়িয়ে গেছেন মমতা। কিন্তু এবার তিনি কী করে তিস্তা দাবির ঝড় সামলাবেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সফর নিয়ে মমতার সুর নরম হলেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে এত সহজেই রাজি হয়ে যাবেন- বিষয়টা আদৌ সে রকম নয়। বাকিটা ঢাকা সফরকালেই বোঝা যাবে। কেউ কেউ বলছেন, মোদির আসন্ন সফরের মন্ত্র হতে পারে দুই দেশের মধ্যে কানেকটিভিটি বা যোগাযোগ ব্যবস্থা।